যুক্তরাষ্ট্রে গণটিকাদান কর্মসূচি শেষে যদি বাড়তি টিকার ডোজ থেকে যায়, সেক্ষেত্রে সেগুলো অন্যান্য দেশকে বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
সম্প্রতি এক বার্তায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের টিকার আওতায় আনা আমাদের জন্য এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চলমান গণটিকাদান কর্মসূচিও এ কারণেই শুরু করা হয়েছে। তবে আমরা এও জানি, গোটা বিশ্ব যতদিন পর্যন্ত নিরাপদ না হবে, ততদিন আমরা কেউই নিরাপদ নই।’
‘দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর যদি টিকার ডোজ বেঁচে যায়, সেক্ষেত্রে সেগুলো অন্যান্য দেশে পাঠানো হবে।’
বিশ্বের মধ্যম ও নিম্ন আয়ের দেশগুলোর টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও টিকা বিতরণকারী আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্যাভি যৌথ উদ্যোগে ‘কোভ্যাক্স গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ’ নামে একটি প্রকল্প শুরু করেছে ২০২০ সালের গোড়ার দিকে। এই প্রকল্পের জন্য ইতমধ্যে ৪ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জো বাইডেন। বার্তায় সে বিষয়টিও উল্লেখ করেছেন তিনি।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট আন্তরিক ভাবে চান, বিশ্বের কোথাও যেন করোনা টিকার সংকট না দেখা দেয়। কিন্তু আমাদের পরিস্থিতি এমন যে এই মূহুর্তে নিজেদের গণটিকাদান কর্মসূচি নিয়েই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তবে উন্নয়নশীল এবং অনগ্রসর দেশগুলো কীভাবে প্রয়োজন অনুসারে টিকার ডোজ পেতে পারে, তা নিয়ে তিনি যথেষ্ট সচেতন।’
একাধিক কোম্পনির করোনা টিকা বাজারে আসার আগে থেকেই উন্নত দেশগুলো সেই কোম্পানির কাছে টিকার ডোজ কিনতে চুক্তি করেছে। সমালোচকরা বলছেন, চুক্তি করা বেশিরভাগ দেশই যে পরিমাণ টিকার ডোজের অর্ডার দিয়েছে, তা ওই দেশগুলোর জনগণের তুলনায় অনেক বেশি।
এই পরিস্থিতিতে কয়েকটি উন্নত দেশ নিজেরা টিকা প্রস্তুত করতে চাইলে ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি ল’ বা বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ রক্ষা আইনের দোহাই দিয়ে তাদের নিবৃত্ত করারও চেষ্টা করেছে বেশ কয়েকটি উন্নত দেশ।
তাদের এই আচরণকে টিকা মজুতদারীর সঙ্গে তুলনা করে এর কঠোর সমালোচনা করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস। কয়েকদিন আগে খেদ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, উন্নত দেশগুলো তাদের বিবেক এবং নৈতিকতার কিনারায় গিয়ে পৌঁছেছে।
এদিকে, ২০২০ সালের শুরুর দিকে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে সংক্রমণ ও মৃত্যুর তালিকায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় তিন কোটি মানুষ এবং এ রোগে এ পর্যন্ত সেখানে মারা গেছেন ৫ লাখ ২৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে দেশটিতে শুরু হওয়া গণটিকাদান কর্মসূচির আওতায় এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষকে টিকার আওতায় আনা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স