মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের উত্তর ওককালাপা থেকে প্রায় তিন শ’ বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী।
বুধবার সকালে উত্তর ওককালাপার কানথারইয়ার পার্কে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস, রাবার বুলেট ও গুলি ছোঁড়ে। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনী অন্তত তিন শ’ বিক্ষোভকারকে গ্রেফতার করে।
নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন।
দাতব্য সেবাদানকারী এক সংস্থা ইরাবতিকে জানায়, তারা তিন আহত বিক্ষোভকারীকে চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। অপর এক বিক্ষোভকারীকে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠান তারা।
পরে গ্রেফতার ব্যক্তিদের মুক্তির জন্য ওই পার্কের কাছে বিক্ষোভকারীরা জড়ো হলে সেখানেও হামলা চালায় নিরাপত্তা বাহিনী।
এর আগে বুধবার ইয়াঙ্গুনের মিঙগালার টাউঙ নাইউন্টের রেলওয়ে স্টাফ কোয়ার্টারে হামলা অভিযান করে নিরাপত্তা বাহিনী।
সামরিক অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে বেসামরিক আইন অমান্য আন্দোলনের (সিডিএম) অংশ নেয়া আট শ’ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে কোয়ার্টার থেকে বের করে দেয়া হয়।
রেলওয়ের এক কর্মচারী ইরাবতিকে জানান, সিডিএমের সাথে যারা জড়িত না, শুধু তাদেরকেই কোয়ার্টারে থাকতে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কোয়ার্টার ছেড়ে যাচ্ছি কারণ আমরা সিডিএম আন্দোলনকে এগিয়ে নেবো।’
১ ফেব্রুয়ারি তাতমাদাও নামে পরিচিত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন।
অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দমনে সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় দেশটিতে ৬৫ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছেন। অপরদিকে অভ্যুত্থানের পর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক হাজারের বেশি বিক্ষোভকারীকে।
সূত্র : ইরাবতি