৬৬৩ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩ ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (১০ মার্চ) এক ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক অবহিত করেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আজকে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৮ম এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১০ম সভা হয়েছে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য ৩টি এবং অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় অনুমোদনের জন্য ৩টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
তিনি বলেন, ক্রয় কমিটির প্রস্তাবগুলোর মধ্যে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের ২টি এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের ১টি প্রস্তাব ছিল। ক্রয় কমিটির অনুমোদিত ৩টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৬৬৩ কোটি ৪৮ লাখ ১৬ হাজার ৯০১ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে সম্পূর্ণ অর্থই জিওবি থেকে ব্যয় হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। প্রতি ইউনিটের দাম ৮.৩৪৫৫ মার্কিন ডলার হিসেবে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ সর্বমোট ব্যয় হবে ২৭৮ কোটি ৭০ লাখ ২৫ হাজার ১২৪ টাকা। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক এওটি ট্রেডিং এজি নামের একটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান উল্লেখিত পরিমাণ এলএনজি সরবরাহ করবে।
সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির আরও একটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রতি ইউনিট এলএনজির দাম ৭.৪৪২১ মার্কিন ডলার হিসেবে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ সর্বমোট ব্যয় হবে ২৪৮ কোটি ৫৩ লাখ ২৯ হাজার ৭৮০ টাকা। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ভাইটল এশিয়া পিটিই নামের একটি প্রতিষ্ঠান উল্লেখিত পরিমাণ এলএনজি সরবরাহ করবে।
সভায় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘কুড়িগ্রাম (দাসেরহাট)-নাগেশ্বরী-ভুরঙ্গামারী-সোনাহাট স্থল বন্দর সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পের প্যাকেজ নম্বর-ডব্লিউপি-২ এর পূর্ত কাজের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান হিসেবে মো. মঈনউদ্দিন (বাঁশি) নিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ১৩৬ কোটি ২৪ লাখ ৬১ হাজার ৯৯৭ টাকা।
এর আগে অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা হয়। সভায় ভারত, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম থেকে জরুরি প্রয়োজনে ৩ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির পৃথক তিনটি প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে জি টু জি পদ্ধতিতে ভারতের পাঞ্জাব স্টেট সিভিল সাপ্লাইজ করপোরেশন লিমিটেড থেকে ১.৫০ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সভায় খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে জি টু জি পদ্ধতিতে থাইল্যান্ডের সাকোন্নাখন ন্যাশনাল ফার্মার্স কাউন্সিল, অফিস অব দি প্রাইম মিনিস্টার থেকে ১.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে জি টু জি পদ্ধতিতে ভিয়েতনামের সাউদার্ন ফুড করপোরেশন থেকে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাল সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে আমদানির নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, চালের দাম এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতদের মাধ্যমে নেগোশিয়েশন করে দাম নির্ধারণ করা হবে। এই প্রস্তাবগুলো আবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে। তখন চালের দাম জানা যাবে।