যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ছড়িয়ে দেওয়ার নামে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগ এনেছে এশিয়ার পরাশক্তি চীন। একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে আরোপিত এমন যাবতীয় ‘অযৌক্তিক’ মার্কিন বিধিনিষেধ তুলে নিতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জিনপিং প্রশাসন। সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াং ই আহ্বানটি জানিয়েছেন। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে দুই দেশের একযোগে কাজ করারও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইঙ্গিত দেন, চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি তার সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এ দিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন চীনের বাস্তবতাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের ভূ-রাজনৈতিক পরীক্ষা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এমন পরিস্থিতিতেই রবিবারের (৭ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
এদিন তাইওয়ান, জিনজিয়াং এবং দক্ষিণ চীন সাগরের বিতর্কিত অশ নিয়ে মার্কিন-চীন বিরোধ নিয়েও কথা বলেন ইয়াং ই। তিনি বলেন, বেইজিং কখনও ভিত্তিহীন অভিযোগ গ্রহণ করবে না।
জিনজিয়াং-এ উইঘুর মুসলমানদের ওপর চীনের কমিউনিস্ট সরকারের চালানো গণহত্যার খবরও অস্বীকার করেন ইয়াং ই। তার দাবি, সেখানে গণহত্যা চালানোর কথা হাস্যকর ও অযৌক্তিক। এটি একটি বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব।
অন্য দিকে চীনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের (সিএমসি) দুই সদস্য মন্তব্য করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্ভাব্য সংঘর্ষের জন্য চীনকে অবশ্যই সামরিক ব্যয় প্রস্তুত রাখতে হবে। বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত বার্ষিক জাতীয় আইনি অধিবেশনে তারা এমন মন্তব্য করেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের বৃহৎ দুই অর্থনীতির মধ্যে সংঘর্ষের আশঙ্কার কথা স্বীকার করা হলো। সাধারণত এমন আশঙ্কার কথা স্বীকার করা হয় না।
প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন সিএমসির ভাইস চেয়ারম্যান ও চীনের উর্দি পরা শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা জু কিলিয়াং বলেছেন, পরাশক্তিদের অনিবার্য দ্বন্দ্ব মোকাবিলায় থুসিডাইডিস ফাঁদের জন্য চীনকে প্রস্তুতি নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, থুসিডাইডিস ফাঁদ ও সীমান্তের বিশৃঙ্খলা মোকাবিলায় নিজেদের সামর্থ্য বৃদ্ধির উদ্যোগ বাড়াতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও মিলন এবং সার্বিক অগ্রগতি। এটি শক্তিশালী হলে দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা থাকবে।
সিএমসির সদস্য ও চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফেঙ্গে পৃথকভাবে বলেছেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল সুর হবে সংবরণ ও পাল্টা সংবরণ।