গাইবান্ধায় কচুরিপানা দিয়ে বাহারি হস্তশিল্প তৈরি করে স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে। তা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে ফুলের টব, ব্যাগ, বালতিসহ নানা সৌখিন সামগ্রী। আর জেলায় ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কচুরিপানা।
এরইমধ্যে শুকনো কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা সামগ্রী রফতানি করা হয়েছে। কচুরীপানাকে অপ্রয়োজনীয়, পচনশীল এবং মশা উৎপাদনের কেন্দ্র বলেই মনে করা হতো। এখন সেই কচুরিপানা দিয়েই তৈরি হচ্ছে রকমারি পণ্য।
শুরুটা গাইবান্ধা সদর উপজেলার মদনের পাড়া গ্রামের যুবক সুভাষ চন্দ্র বর্মনের হাত ধরে। ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ শিখে ২০১৬ সালে নিজের গ্রামে গড়ে তুলেন কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠান। বিশেষভাবে প্রক্রিয়াজাত করা শুকনো কচুরিপানা দিয়ে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ফুলের টব, ব্যাগসহ নানা ধরণের সামগ্রী।
প্রথমে ছোট পরিসরে শুরু করলেও, এখন চারটি এলাকায় কর্মসংস্থান হয়েছে আড়াই শতাধিক নারী ও কিশোরীর। স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষার্থী কাজ করে উপার্জন করছেন।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন,এত সুন্দর ফুলদানি এটা দিয়ে তৈরি করা সম্ভব তা তাদের কাছে অবাক লেগেছে। এই কাজটা করতে পেরে ভালোই লাগছে। দিনে অনেকগুলো ফুলদানি তৈরি করা সম্ভব। কাজ করে তারা উপার্জনও করছে।
দেশিয় বাজারে এসব পণ্যের চাহিদা কম থাকলেও রফতানি হয় ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নেদারল্যান্ডস সহ কয়েকটি দেশে।
কচুরিপানা শিল্পের উদ্যোক্তা সুভাষ চন্দ্র বর্মণ বলেন, ‘এটি এখন বিভিন্ন দেশে রফতানি করার বড় একটা খাত হতে পারে। সরকারের সাহায্য পেলে লোকবল বাড়ানোর পাশাপাশি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারব।’
অভিনব এই উদ্যোগ গ্রামীন নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল মতিন বলেন, ‘এটা অনেক বড় একটি কাজ। এতে করে গ্রামের মেয়েরা কাজ করার জন্য বড় ধরনের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে আমরা তাদের আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করতে চেষ্টা করবো।’