সামরিক অভ্যুত্থান ও বিক্ষোভকারীদের ওপর সহিংস আচরণের কারণে মিয়ানমারের সঙ্গে সব ধরনের সামরিক সম্পর্ক স্থগিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। সহিংসতা ও মৃত্যু বৃদ্ধিতে উদ্বেগ তৈরি হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ম্যারিস পেইন।
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে দৃঢ়ভাবে অনুরোধ করছি যেন তারা সংযম চর্চা করেন এবং বেসামরিক লোকজনের ওপর সহিংসতা চালানো থেকে বিরত থাকেন।
অস্ট্রেলিয়া রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের জরুরি মানবিক সাহায্য প্রদান আবার শুরু করবে জানিয়ে পেইন বলেন, আমরা উন্নয়ন প্রকল্প ও উন্নয়ন সহযোগিতার দিকেও নজর দিচ্ছি যেটা আমরা প্রদান করছি এবং আসিয়ানের অন্যতম দরিদ্র দেশ মিয়ানমারের সবচেয়ে দুর্বল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সাহায্য দেয়ার বিষয়ে পুরোপুরি জোর দিচ্ছি।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিরক্ষা বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মূলত অসামরিক বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানোর পরও অস্ট্রেলিয়া বার্মিজ সেনাবাহিনীকে ইংরেজি প্রশিক্ষণ প্রদান প্রকল্প অব্যাহত রেখেছিল।
লন্ডনভিত্তিক সংস্থা বার্মা ক্যাম্পেইনের নির্বাহী পরিচালক আনা রবার্টস বলেন, অস্ট্রেলিয়ার এই প্রশিক্ষণ প্রকল্প শুরু করাই ঠিক ছিল না। বার্মা ক্যাম্পেইনের তথ্যমতে, যেসব দেশ মিয়ানমারকে এখনো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে তাদের মধ্যে রয়েছে চীন, ভারত, পাকিস্তান ও ইউক্রেন।
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দেশটির শীর্ষ নেত্রী অং সান সু চি ও প্রেসিডেন্ট উইন্ট মিন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের বন্দি করা হয়। এরপর থেকেই দেশজুড়ে বিক্ষোভ করছে সাধারণ মানুষ। নিরাপত্তা বাহিনী পাখির মতো গুলি ছুড়লেও বিক্ষোভকারীদের দমানো যায়নি। এখন পর্যন্ত প্রায় একশ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।
নিরাপত্তাবাহিনীর গুলির ভয় উপেক্ষা করে রোববারও মিয়ানমারের রাস্তায় বিক্ষোভ করে লাখ লাখ মানুষ। শনিবার রাতে ব্যাপক ধরপাকড়ের পরও বিক্ষোভকারীরা রোববার রাস্তায় নেমে আসে। এসময় অন্তত ৭০ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়।