হংকংয়ে সাম্প্রতিক অস্থিরতার মধ্যেই নতুন করে চীন নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটির নির্বাচন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে চীনা সরকার। শুক্রবার চীনের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেসে (এনপিসি) চলমান অধিবেশনে এক প্রস্তাবের মাধ্যমে হংকংয়ের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হচ্ছে, যাতে শুধু ‘দেশপ্রেমিকরাই’ হংকংয়ের ক্ষমতায় আসতে পারে।
এনপিসির মুখপাত্র জ্যাং ইয়েসুই এর আগে বৃহস্পতিবার বলেন, পার্লামেন্টের সাংবিধানিক ক্ষমতা রয়েছে হংকংয়ের নির্বাচনী ব্যবস্থা ‘উন্নত করার’ এবং এমন নির্বাচনী কাঠামো পূর্ণভাবে প্রয়োগ করা উচিত, যাতে হংকংয়ের ক্ষমতায় দেশপ্রেমিকরা আসেন।
১৯৯৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে চীনের শাসনাধীনে হংকংয়ের আসার পর চীনা কংগ্রেসের এই পদক্ষেপ ওই অঞ্চলের গণতন্ত্রের জন্য বিশাল আঘাত।
হংকংয়ের স্থানীয় ‘কেবল টিভি’ ও ’নাও টিভি’ অজ্ঞাত সূত্রের উল্লেখ করে জানায়, এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিটির আকার বাড়ানো হবে। কমিটির বর্তমান সদস্য সংখ্যা এক হাজার দুই শ’ থেকে বাড়িয়ে এক হাজার পাঁচ শ’ করা হবে। আইনসভার আসন ৭০ থেকে বাড়িয়ে ৯০টি করা হবে।
আলজাজিরার প্রতিনিধি ক্যাটরিনা ইউ বেইজিংয়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে বলেছেন, হংকংয়ের ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিলরদের নির্বাচন কমিটি থেকে বাদ দেয়া হবে যে কমিটি হংকংয়ের চিফ এক্সিকিউটিভকে নির্বাচিত করবে।
এর বদলে চিফ এক্সিকিউটিভের অধীনে একটি নতুন কাঠামো গঠন করা হবে। বিভিন্ন তদন্তের পর নতুন কাঠামোর অধীনে প্রার্থীদের নির্বাচনের জন্য অনুমোদন দেয়া হবে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুসারে, পিছিয়ে যাওয়া লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের নির্বাচন সম্ভবত আরো বিলম্ব করে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নেয়া হবে।
শুক্রবার এনপিসির উদ্বোধনীতে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াং বলেন, বেইজিং হংকংকে দৃঢ়ভাবে হংকংকে রক্ষা করবে এবং অঞ্চলটির বিষয়ে বাইরের হস্তক্ষেপকে বাধা দেবে।
ক্যাটরিনা ইউ বলেন, হংকয়ে চীনের সংস্কারের কারণে দেশটিকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বহু সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু চীন তা বিবেচনায় না নিয়ে অঞ্চলটিকে আরো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে।
হংকং সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে যেকোনো পরিবর্তন বেইজিংয়ের বিশেষ ক্ষমতার প্রকাশ।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একমাত্র ‘দেশপ্রেমিক শাসিত হংকং’ কেন্দ্রীয় সরকারের আইনগত অধিকারকে হংকংয়ের ওপর কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে পারে, সংবিধান ও মৌলিক আইনের অধীনে সাংবিধানিক শৃঙ্খলাকে নিরাপদ করবে এবং হংকংয়ের দীর্ঘস্থায়ী স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা অর্জিত হবে।
তবে এই সংস্কার হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের জন্য ভয়াবহ এক আঘাত, যারা চীনের ‘জাতীয় নিরাপত্তা আইনের কারণে’ চাপের মধ্যে রয়েছেন।
সূত্র : আলজাজিরা