নিজেদের প্লাটফর্মে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে জনপ্রিয় সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম ইউটিউব। ‘সহিংসতার সত্যিকারের হুমকি’ হ্রাস পেলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে বলে বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) জানান সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী সুসান ওজসিককি।
বৃহস্পতিবার তিনি জানান, সরকারের সতর্কবার্তা এবং (ট্রাম্পের) কোনো হিংসাত্মক বক্তৃতা না থাকলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে জানুয়ারির ৬ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ক্যাপিটল ভবনে হামলায় সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে নিজেদের প্লাটফর্ম থেকে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধ করেছিল ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। সহিংসতায় উস্কানি দেওয়ার মাধ্যমে ট্রাম্প ইউটিউব ব্যবহারের নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন বলে সেসময় জানিয়েছিল সংস্থাটি। তবে এখন দেশটির রাজনৈতিক পরিস্থিতি শান্ত হওয়ায় এবং সহিংসতার আশঙ্কা কমে আসায় ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টটি আবারও খুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার আটলান্টিক কাউন্সিলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ইউটিউবের প্রধান বলেন, এটা পরিষ্কার যে, বর্তমান পরিস্থিতিতেও সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে। তবে জানুয়ারিতে ট্রাম্পের কর্মকাণ্ড তাকে এই প্লাটফর্মে পুরোপুরি নিষিদ্ধ করার মতো ছিল না।
এর আগে গত জানুয়ারিতে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট ‘অনির্দিষ্টকালের’ জন্য বন্ধ করে দেয় জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক। অন্যদিকে টুইটারে ট্রাম্প নিষিদ্ধ হন স্থায়ীভাবে। তবে ইউটিউবের নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী ছিল না।
সেসময় ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, বেশ সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনার পর ট্রাম্পের সর্বশেষ একটি ভিডিওতে মানুষকে সহিংসতায় উস্কানি দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়ার পরই ভিডিওটি সরিয়ে নেওয়া হয় এবং নীতি ভাঙার দায়ে তার চ্যানেলের বিরুদ্ধে ‘স্ট্রাইক’ ইস্যু করা হয়।
স্ট্রাইক পাওয়া চ্যানেলের বিষয়ে ইউটিউব দীর্ঘদিন ধরে একটি নিয়ম অনুসরণ করে আসছে। আর তা হচ্ছে- অভিযুক্ত চ্যানেলে প্রথম স্ট্রাইক পাওয়ার পর পরবর্তী সাতদিন নতুন করে কোনো ভিডিও আপলোড বা সরাসরি সম্প্রচার করা যায় না। তবে ট্রাম্পের চ্যানেলে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়তে পারে বলে সেসময় জানিয়েছিল ইউটিউব।
ইউটিউবের নীতি অনুযায়ী, প্রথমবার স্ট্রাইক পাওয়া চ্যানেলকে সাতদিনের জন্য, দ্বিতীয় দফায় স্ট্রাইক পাওয়া চ্যানেলকে দুই সপ্তাহের জন্য এবং তৃতীয় দফায় স্ট্রাইক পাওয়া চ্যানেলকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জানুয়ারিতে প্রথম স্ট্রাইক পেলেও টানা প্রায় দুই মাস প্লাটফর্মটিতে নিষিদ্ধ রয়েছেন ট্রাম্প। আর এবার ইউটিউব কর্তৃপক্ষের নরম মনোভাবে নিজের অ্যাকাউন্টটি ফেরত পাওয়ার আশা করতেই পারেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
সূত্র: বিবিসি