বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর অন্যতম সদস্য ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ১টায় চিকিৎধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন শেখ হাসিনা ও মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ।
পেশাগত জীবনের দায়িত্বটা শুরু হয়েছিলো পূর্ব পাকিস্তানের উচ্চ পর্যায়ের সরকারী কর্মকর্তা হিসেবে। কিন্তু মা-মাটি-দেশের প্রতি অকুন্ঠ কৃতজ্ঞতা বোধের কারণেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন হোসেন তৌফিক ইমাম বা এইচ টি ইমাম।
যিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এরপরে আমলা হিসেবে দীর্ঘ পেশাগত জীবন কাটালেও রাজনীতি অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ভালোই ছিলো এইচ টি ইমামের। যে কারণেই কিনা ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে প্রথমে জনপ্রশাসন বিষয়ক উপদেষ্টা পরে ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা নিয়োগ করেন।
রাজনীতির মারপ্যাঁচ যেমন বুঝতেন তেমনি ছিলেন একজন সুবক্তা ও সুলেখক। বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা পরিচালনায় তার মূল্যবান কয়েকটি গ্রন্থও রয়েছে।
১৯৩৯ সালের ১৫ জানুয়ারি টাঙ্গাইল শহরে জন্ম গ্রহন করেন। শৈশব ও প্রাথমিক শিক্ষা রাজশাহীতে হলেও পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া ও কলকাতায়ও পড়াশোনা করেন তিনি। ১৯৫২ সালে ম্যাট্রিক পাস করেছেন ঢাকা কলেজিয়েট হাইস্কুল থেকে। এরপর ভর্তি হন পাবনা এডওয়ার্ড কলেজে। এখান থেকেই ১৯৫৪ তে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এর পর ভর্তি হন রাজশাহী কলেজ এবং সেখান থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সহ বি.এ. ডিগ্রী অর্জন করেন ১৯৫৬তে। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এ সময় তিনি প্রগতিশীল ছাত্র রাজনীতির সাথে বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ১৯৫৮ তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডিগ্রী অর্জন করেন।
রাজশাহী সরকারি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক ছিলেন। পাকিস্তানে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১৯৬১ ব্যাচের সিএসপিদের মধ্যে তিনি ৪র্থ স্থান লাভ করেন এবং পাকিস্তান সরকারের উচ্চ পদে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে তিনি লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে ‘উন্নয়ন প্রশাসনে’ পোস্ট গ্রাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন। তদানিন্তন পূর্ব পাকিস্তানে বেশ কয়েকটি জেলায় সরকারি দায়িত্ব পালন করেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলীয় নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান।
বেশ কিছু দিন ধরে হার্ট, কিডনি জটিলতা ও খাদ্যনালীর সমস্যায় ভুগছিলেন এই গুণী রাজনীতিবিদ। উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশ নেয়ার কথা ভাবা হলেও শারীরিক অবস্থা ভাল না হওয়ায় সেটি সম্ভব হয়নি
সর্বশেষ বুধবার দিবাগত রাতে, বৃহস্পতিবারের প্রথম প্রহরে দুনিয়ার মায়া ছেড়ে চলে গেছেন এইটি ইমাম।