যোগাযোগ খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকার সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (আরএডিপি) অনুমোদন করেছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি)।
মঙ্গলবার (২ মার্চ) রাজধানীর শেরেবাংলানগর পরিষদের সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এনইসি সভায় সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
সভা শেষে পরিকল্পনা সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, ‘মূল এডিপির বরাদ্দ ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সংশোধিত এডিপিতে তিন দশমিক ২৬ শতাংশ অর্থ্যাৎ ৭ হাজার ৫০১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা কমানো হয়েছে।’
তিনি জানান, সভায় এডিপির সরকারের নিজস্ব অর্থে বাস্তবায়ন অংশ সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রায় একই রাখা হয়েছে, যার পরিমাণ এক লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। আর বিদেশি ঋণে বাস্তবায়ন করা অংশ ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ কমিয়ে ৬৩ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
জয়নুল বারী বলেন, সংশোধিত এডিপিতে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১১ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। ফলে, সংশোধিত এডিপির মোট আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৯ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।
সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ৮৮৬টি। এর মধ্যে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার ১০১টি প্রকল্প রয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে পরিকল্পনা সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পসমূহের কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি প্রকল্প পরিচালকদের প্রকল্প এলাকায় থাকার এবং একজন একটির বেশি বা একাধিক প্রকল্পের দায়িত্বে যেন না থাকেন তারও নির্দেশ দেন।
এর পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে শুষ্ক মৌসুমে নদী খনন, চলমান টিকাদান কর্মসূচি সফল করা, খাদ্য ও কৃষি উৎপাদনে মনোযোগ প্রদানসহ সার্বিকভাবে কোভিড অতিমারির মধ্যে অর্থনৈতিক গতিপ্রবাহ ধরে রাখার জন্য কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে বলেছেন।
সংশোধিত এডিপিতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার, অধিক কর্মসংস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চত করা হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন ও দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
খাতভিত্তিক এডিপিতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পরিবহন খাতে। সেখানে বরাদ্দ ৪৯ হাজার ২১৩ কোটি টাকা। এরপর রয়েছে ভৌতপরিকল্পনা, পানিসরবরাহ ও গৃহায়ন খাতে ২৬ হাজার ৪৯২ কোটি টাকা, শিক্ষা ও ধর্ম খাতে ২৪ হাজার ৫৭২ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ খাতে ২১ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা, পল্লী উন্নয়ন ও প্রতিষ্ঠান খাতে ১৮ হাজার ২৯০ কোটি টাকা, স্বাস্থ্য খাতে ১৪ হাজার ৯২২ কোটি টাকা এবং কৃষি খাতে ৭ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ১৭টি খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।