চীনের ই–কমার্স জায়ান্ট আলিবাবা ও এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান অ্যান্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা চীনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তির তকমা হারিয়েছেন। শুধু শীর্ষস্থান নয় তিন ধাপ পিছিয়ে তিনি এখন চারে। চীনের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ তার প্রতিষ্ঠানের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করায় সম্পদ হারিয়েছেন তিনি।
সাংহাইভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হুরুন চায়না রিচ লিস্টে ২০১৯ ও ২০২০ সালে জ্যাক মা ও তার পরিবারের অবস্থান শীর্ষে ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায় দেখা যাচ্ছে, জ্যাক মা আর চীনের শীর্ষ ধনী নেই। তালিকায় দুই কিংবা তিনেও তার নাম নেই। তার অবস্থান চতুর্থ স্থানে।
কিছুদিন ধরেই দেশে সরকারের খড়্গের মুখে পড়েছে আলিবাবা। চীন সরকার বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে।
জ্যাক মাকে টপকে চীনের শীর্ষ ধনী এখন চীনা বোতলজাত পানির কোম্পানি নোংফু স্প্রিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ঝং শানশান। দেশটির বৃহত্তম গেম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেনসেন্টের পনি মা রয়েছেন তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। এদিকে শপিং অ্যাপ্লিকেশন পিনডুয়োডুয়ো বা পিডিডির প্রতিষ্ঠাতা কলিন হুয়াং তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছেন।
বেশ কিছুদিন ধরে নিজ দেশেই সরকারের খড়্গের মুখে পড়েছে আলিবাবা। চীন সরকার বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। সেই সঙ্গে চীনের বৃহত্তম অনলাইন সংস্থাগুলোর একচেটিয়া ব্যবসার ওপর নিয়ন্ত্রণ এনেছে দেশটির সরকার। এতে করে জ্যাক মার কোম্পানির শেয়ারে দরপতন হয়েছে।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর জ্যাক মা চীনের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নজরদারি পদ্ধতির সমালোচনা করার পর এই সমস্যার শুরু। জ্যাক মার এমন সমালোচনার পর বেইজিং কর্তৃপক্ষও তৎপর হয়ে তার কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে।
হুরুন রিপোর্টে বলা হচ্ছে, জ্যাক মার প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ও অ্যান্ট গ্রুপের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনে চীন সরকার তদন্ত শুরু করার পর শীর্ষস্থান হারিয়ে ধনীর তালিকায় চারে নেমেছেন তিনি। অপরদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী চীনের বাকি ধনকুবেরদের এতে পোয়াবারো হয়েছে।
এই সমস্যার শুরু গত বছরের ২৩ অক্টোবর থেকে। ওইদিন তিনি চীনের নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের নজরদারি পদ্ধতির ব্যাপক সমালোচনা করেন। বেইজিং কর্তৃপক্ষও তৎপর হয়ে ওঠে। ক্ষুব্ধ বেইজিং জ্যাক মার কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে। স্থগিত করে দেওয়া হয় অ্যান্ট গ্রুপের ৩৭ বিলিয়ন ডলারের আইপিও।
এসব ঘটনার পর তো কিছুদিন জ্যাক মার কোনো খোঁজই পাওয়া যাচ্ছিল না। তাকে নিয়ে অনেক ধরনের গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তার নিখোঁজের সংবাদ ঘটা করে প্রচার শুরু হয়। তবে সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধে জ্যাক মাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়।