চীনের মুসলিম সংখ্যালঘু উইঘুর জনগোষ্ঠীর ওপর চীনের দমননীতিকে এবার গণহত্যা বললো উত্তর ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ড। বৃহস্পতিবার দেশটির পার্লামেন্টে এক প্রস্তাবে এই বক্তব্য পাস হয়। ইউরোপের দেশটির জন্য এই ধরনের এটিই প্রথম পদক্ষেপ। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পর তৃতীয় দেশ হিসেবে চীনের উইঘুর নীতিকে গণহত্যা হিসেবে উল্লেখ করলো নেদারল্যান্ড। -আল জাজিরা
প্রস্তাবে চীনে উইঘুর সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে গণহত্যা চালানোর কথা বলা হলেও এতে চীনা সরকারের দায়বদ্ধতার কথা সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। প্রস্তাবের প্রস্তুতকারী পার্লামেন্ট সদস্য সয়ের্ড সয়ের্ডসমা পৃথকভাবে গণহত্যা বন্ধে চীনের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে ২০২২-এর শীতকালীন অলিম্পিকের আয়োজন বেইজিং থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটিতে লবিংয়ের সুপারিশ করেন। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, উইঘুর জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত চীনের পশ্চিমের জিংজিয়াং প্রদেশে অন্তত ১০ লাখ মুসলমানকে বন্দী শিবিরে আটকে রাখা হয়েছে। বন্দীশিবিরগুলোতে আটকদের বাধ্যতামূলক শ্রম ও নারীদের বন্ধ্যাকরণসহ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। চীন অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আসছে, উগ্রবাদ মোকাবেলার জন্য তারা এই সকল শিবিরে কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে।
নেদারল্যান্ডের পার্লামেন্টে এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে হেগের চীনা দূতাবাস জিংজিয়াংয়ে গণহত্যার বিষয়কে ‘স্পষ্ট মিথ্যা’ হিসেবে উল্লেখ করে। চীনা দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই পদক্ষেপ চীনের ভাবমূর্তি ইচ্ছা করে ক্ষুণ্ণ করার এবং নগ্নভাবে চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে প্রচেষ্টা। নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের রক্ষণশীল ভিভিডি পার্টি অবশ্য এই প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। প্রস্তাব পাসের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টেফ ব্লক সাংবাদিকদের বলেন, সরকার গণহত্যা শব্দটি ব্যবহার করতে চায়নি, যেহেতু জাতিসঙ্ঘ বা আন্তর্জাতিক কোনো আদালত এই পরিস্থিতিকে গণহত্যার সাথে তুলনা করেনি। তবে উইঘুরদের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক উল্লেখ করে ব্লক বলেন, নেদারল্যান্ড অন্য দেশগুলোর সাথে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে।