রোহিঙ্গারা যেন নিরাপত্তা ও সম্মানের সাথে তাদের বাসভূমি রাখাইনে ফিরে যেতে পারে- সেই পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন মিয়ানমারের ওপর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধানের উপায় বের করতে দ্বিপক্ষীয় ও বহুপাক্ষীয় পর্যায়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে মার্কিন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রকাশিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন থিংক ট্যাংক ‘নিউলাইন্স ইনস্টিটিউট অন স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির সাথে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
ড. মোমেন আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার তার রোহিঙ্গাবিষয়ক একজন বিশেষ দূত নিয়োগের প্রস্তাব ও রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনসহ মার্কিন সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ ও অগ্রণী ভূমিকায় দেখতে আগ্রহী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ ব্যাপারেও মার্কিন প্রশাসনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া এই ১১ লাখ বাস্তুচ্যুত মানুষকে তাদের নিজভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনই এই রোহিঙ্গা সংকটের একমাত্র সমাধান।
এ সময় মোমেন বাংলাদেশে সরকার কীভাবে কোভিড-১৯ মহামারিকালে রোহিঙ্গাদের কল্যাণে কাজ করেছে তাও তুলে ধরেন। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বাংলাদেশ সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপ নেয়ায় কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে একজন রোহিঙ্গাও মারা যায়নি। তিনি অতি ঘনবসতিপূর্ণ কুতুপালং শরণার্থী শিবির থেকে কিছু রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরের কারণও ব্যাখ্যা করেন।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আজিম ইবরাহিম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অন্যদের মধ্যে জাতিসংঘে সাবেক মার্কিন দূত, ধর্মীয় স্বাধীনতাবিষয়ক মার্কিন কংগ্রেসের কমিশনার এবং প্রখ্যাত সাংবাদিক, কংগ্রেস সদস্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, জাতিসংঘের কর্মকর্তা এবং ওআইসির সিনিয়র নেতারা অনুষ্ঠানে সশরীরে ও ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মর্যাদাপূর্ণ কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনস (সিএফআর) আয়োজিত ‘বাংলাদেশ-মার্কিন দ্বিপাক্ষীয় সম্পর্ক ও রোহিঙ্গা ইস্যু’ শীর্ষক একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অধিবেশনটি অ্যাম্বাসেডর ইসোবেল কোলম্যান সঞ্চালনা করেন।
ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানটিতে ড. মোমেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলা করে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কর্মসূচি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাম্প্রতিক আলোচনার উদাহরণ টেনে তিনি দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান দ্বিপাক্ষীয় অংশীদারিত্বে সন্তোষ প্রকাশ করে কৌশলগত স্তরে এটা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন।