অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারী মিয়ানমার বাহিনীর হাতে আটক দেশের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিকে মুক্তি দিয়ে সামরিক বাহিনী ও অভ্যুত্থানে উসকানিদাতাদের সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক রাব।
সোমবার ( ২২ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেয়া এক বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানাবেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে দেয়া বক্তব্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে দেশটির গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান জানিয়ে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাবেন ডমিনিক রাব। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারী অন্তত দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের পর এ ব্যাপারে আরও তৎপর বিশ্ব সম্প্রদায়।
মিয়ানমারে বিক্ষোভকারী নিহতের ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় এক টুইট বার্তায় ডমিনিক রাব বলেন, ‘গণতন্ত্র ধ্বংসকারী ও মতপ্রকাশে বাঁধা প্রদানকারীদের দমনে আমাদের আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপে যাব।’
পরবর্তীতে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে ডমিনিক রাব বলবেন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অপব্যবহারের মাধ্যমে মিয়ানমারের অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। চলমান পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা ও অন্যান্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ঝুঁকিতে পড়বে। সু চির মতো বেসামরিক নেতাদের মুক্তির আহ্বান জানাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরের নির্বাচনে অং সান সুচির এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। নির্বাচনে জয়ী হয়ে তার দলের সরকার গঠনের কথা থাকলেও সেনাবাহিনী তা আটকে দিয়েছে। নির্বাচনের পর থেকেই সেনাবাহিনী জালিয়াতির অভিযোগ করে আসছে। এই অভিযোগ এনেই মূলত ক্ষমতা দখলের সাফাই গেয়ে আসছে সেনাবাহিনী। কিন্তু ভোট জালিয়াতির কোনও প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকেই প্রতিবাদ মিয়ানমারে বিক্ষোভ চলছে। আটক করা হয়েছে সু চিসহ তার দল এনএলডির অনেক নেতাকে। দেশটিতে আগামী এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থাও জারি করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে সেনাশাসন বিরোধী বিক্ষোভ দমনে আইন সংশোধন করেছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। কেউ সশস্ত্র বাহিনীর কাজে বাধা দিলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। এছাড়া নতুন আইনে কেউ অভ্যুত্থানকারী নেতাদের বিরুদ্ধে ঘৃণা বা অপমানসূচক কিছু প্রকাশ করলেই দীর্ঘমেয়াদী কারাদণ্ড বা মোটা অংকের জরিমানার মুখে পড়তে পারেন বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।