কানাডায় করোনার টিকাদান চলছে। তবে ভাইরাসের লাগাম টেনে ধরা যায়নি। করোনার নতুন ধরন ও তৃতীয় ধাক্কা ঠেকাতে কানাডার সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে টিকাদানের পাশাপাশি বিদেশ থেকে কানাডায় আসা যাত্রীদের তিন দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন কার্যকর করতে যাচ্ছে দেশটি। সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে সরকার নির্ধারিত হোটেলে বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন শুরু হবে।
দেশটির বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকায় কোয়ারেন্টাইনের জন্য ১১টি হোটেল নির্দিষ্ট করে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কানাডায় আসা যাত্রীদের নিজ খরচে বাধ্যতামূলকভাবে তিন দিন অনুমোদিত হোটেলে অবস্থান করতে হবে। বর্তমানে টরন্টো, মন্ট্রিয়ল, ভ্যাঙ্কুভার এবং ক্যালগেরি- এই চারটি বিমান বন্দরকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। বিদেশফেরত যাত্রীদের নির্ধারিত হোটেলগুলোর সবকটিই বিমানবন্দর সংলগ্ন।
বিদেশফেরত যাত্রীদের বাধ্যতামূলকভাবে অবস্থানের জন্য সরকার নির্ধারিত হোটেলগুলো হচ্ছে- টরন্টোয় হোটেল পিয়ারসন এয়ারপোর্ট, ফোর পয়েন্টস শেরাটন, হলিডে ইন এবং শেরাটন গেটওয়ে, মন্ট্রিয়লে- মন্ট্রিয়ল এয়ারপোর্ট, ক্রাউন প্লাজা মন্ট্রিয়ল এয়ারপোর্ট, হলি ডে ইন এক্সপ্রেস এবং মন্ট্রিয়ল এয়ারপোর্ট ম্যারিয়ট ইন টার্মিনাল, ক্যালগেরির এক্লেইম হোটেল এবং ম্যারিয়ট ক্যালগেরি এয়ারপোর্ট, ভ্যাঙ্কুভারের ওয়েস্টিন ওয়াল সেন্টার।
জরুরি নয় এমন কাজে বিদেশে যাওয়া কানাডিয়ানদের দেশে ফেরার পর বিমানবন্দরে বাধ্যতামূলকভাবে কোভিডের পিসিআর টেস্ট করাত হবে। ফলাফলের জন্য অপেক্ষার ৭২ ঘণ্টা সময় তাদের বাধ্যতামূলকভাবে হোটেলে থাকতে হবে। যাদের ফলাফল নেগেটিভ হবে তারা নিজ বাসভবনে গিয়ে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন সম্পন্ন করবেন।
বিদেশি নাগরিকদের জন্য কানাডায় সফর বর্তমানে নিষিদ্ধ রয়েছে। তবে কানাডার নাগরিক বা স্থায়ী বাসিন্দাদের পরিবারের নিকটতম সদস্যদের এই নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে।
বিভিন্ন দেশে করোনার টিকাদান শুরু হয়েছে। তবে এখনও ভাইরাসটির লাগাম টেনে ধরা যায়নি। কানাডায় ইতোমধ্যে করোনায় মারা গেছেন ২১ হাজার ৬শ ৩০ জন। কানাডায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ৪৩ হাজার ৩ শত ১ জন। সুস্থ হয়েছেন ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৮ শ ৪১ জন। এদিকে শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ কোটি ১২ লাখ ৪৩ হাজার ৩৭০ জনে। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫৬৮ জন। আর ৮ কোটি ৬১ লাখ ১৯ হাজার ৫১০ জন সুস্থ হয়েছেন।
ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৫ লাখ ৭ হাজার ৭৪৬ জন মারা গেছেন। বিশ্বে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যাও এই দেশটিতে। এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ২ কোটি ৮৬ লাখ ৩ হাজার ৮১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৮৮ লাখ ৩ হাজার ৭২৩ জন।
যুক্তরাষ্ট্রের পর মৃত্যু বিবেচনায় করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ ব্রাজিল। আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে থাকলেও মৃত্যু বিবেচনায় দেশটির অবস্থান দ্বিতীয়। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৮১ হাজার ৬৯৩ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৯৫৫ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৯০ লাখ ২৯ হাজার ১৫৯ জন।
এদিকে আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসা ভারত মৃত্যু বিবেচনায় আছে তৃতীয় স্থানে। এ পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৯ লাখ ৭৬ হাজার ৭৭৬ জন। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ২৪০ জনের। আর সুস্থ হয়েছেন ১ কোটি ৬ লাখ ৭৫ হাজার ৮৮২ জন।