কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিলের ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা। এছাড়া কাশ্মীরে নতুন ভূমি আইনের ফলে মুসলিম এবং অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ সঙ্কুচিত হবে বলে তারা সতর্ক করেছেন।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, গত বুধবার আফ্রিকান, ইউরোপীয়ান এবং ল্যাটিন আমেরিকার ২৪টির বেশি দেশের দূতরা বিতর্কিত অঞ্চলটির পরিস্থিতি মূল্যায়নে সরকার পরিচালিত ভ্রমণে পরিদর্শন করেন। তাদের পরিদর্শনের একদিন পর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞদের এই বিবৃতি আসলো।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনের দপ্তর থেকে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিগত, ভাষাগত এবং ধর্মীয় পরিচয়ের প্রতি শ্রদ্ধা রাখতে নির্দিষ্ট স্বায়ত্তশাসন দিয়েই জম্মু এবং কাশ্মীর প্রদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটা ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশ ছিল।
জাতিসংঘের সংখ্যালঘু বিষয়ক বিশেষ দূত ফার্নান্দ ডি ভ্যারেন্স এবং ধমীয় বিশ্বাস ও স্বাধীনতা বিষয়ক বিশেষ দূত আহমেদ শহীদ বিবৃতিতে আরও বলেন, `স্বায়ত্তশাসন হারানো এবং দিল্লির প্রত্যক্ষ শাসন জারি; জম্মু কাশ্মীরের নাগরিকদের নিজস্ব কোনো সরকার নেই এবং সংখ্যালঘু হিসেবে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে তারা আইন প্রণয়ন এবং সংশোধন করতে পারবে না বলে ইঙ্গিত দেয়।‘
কাশ্মীর হিমালয় অঞ্চলে অবস্থিত একটি এলাকা যেটিকে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই নিজেদের বলে দাবি করে। একসময় জম্মু ও কাশ্মীর হিসেবে পরিচিত রাজ্যটি ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে উপমহাদেশের স্বাধীনতা লাভের সময় ভারতের সাথে যুক্ত হয়।
২০১৯ সালের আগস্ট মাসে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী সরকার সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ করে। এই ধারায় কাশ্মীরের বিশেষ ধরণের স্বায়ত্তশাসন ভোগ করার অধিকার ছিল ফলস্বরুপ জম্মু ও কাশ্মীর নাগরিকত্ব, সম্পদের মালিকানা এবং মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত আইন নিজেরা তৈরি করার ক্ষমতা রাখতো।
৩৭০ ধারা বিলোপের পর কাশ্মীরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। সরকার ভারতপন্থি রাজনৈতিকসহ কাশ্মীরের হাজার হাজার মানুষকে আটক করে, ইন্টারনেট বন্ধ রাখে। চলতি মাসে কাশ্মীরে উচ্চগতির ইন্টানেট চালু করা হয়।
হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকার ৩৭০ ধারা বিলোপের পাশাপাশি ভূমি এবং বাসস্থান আইনে পরিবর্তন করে। পূর্বে কাশ্মীরের বাইরে কেউ অঞ্চলটিতে জমি কিনতে পারতো না। কিন্তু নতুন আইনের ফলে সমগ্র ভারতীয়দের জন্য কাশ্মীরে জমি কেনার পথ উন্মুক্ত হয়।