করোনা চিকিৎসায় প্রতারণায় দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত মোহাম্মদ সাহেদ করিমকে ৩ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিলেট কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
সিলেটে এক ব্যবসায়ীর দায়েরকৃত প্রতারণা মামলায় মঙ্গলবার তাকে সিলেটের আদালতে হাজির করা হয়। মঙ্গলবার সকালে সিলেটের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ২য় আদালতে হাজির করা হলে বিচারক অঞ্জন কান্তি দাশ অভিযুক্ত সাহেদ করিমকে চেক ডিজঅনারের তিন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে সিলেট কারাগারে প্রেরণ করেন।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে সিলেটের আদালতে দায়েরকৃত আরেকটি প্রতারণার মামলাও তদন্ত করে পুলিশকে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আদালতে দায়েরকৃত ৪টি মামলার বাদী সিলেট জৈন্তাপুর উপজেলার পাথর ব্যবসায়ী মাওলা স্টোন ক্রাশারের মালিক শামসুল মাওলা। মঙ্গলবার সকালে কড়া নিরাপত্তা ও কঠোর গোপনীয়তার মাধ্যমে সাহেদ করিমকে সিলেট আদালতে হাজির করে পুলিশ।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী এপিপি আবদুস সাত্তার জানান, সাহেদের বিরুদ্ধে আদালতে চারটি মামলা দায়ের করেছিলেন ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা। সাহেদ করিমের কাছে তার ৩০ লাখ ৫০ হাজার টাকা পাওনা ছিল। সেই টাকার বদলে সাহেদ ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার ৩টি চেক দিয়েছিলেন। কিন্তু মামলার বাদী টাকা পাননি।
পরে তিনি চেক ডিজঅনার করে মামলা করেন। এছাড়াও অন্য একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ১০ লক্ষ টাকার একটি ভুয়া চেক দিয়ে পাথর কিনেন সাহেদ। এজন্য আদালতে আরেকটি প্রতারণা, জালিয়াতি ও আত্মসাৎ মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা।
আদালত মামলাটি গ্রহণ করে তদন্তপূর্বক দ্রুত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জৈন্তাপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।
সাহেদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী শামসুর ইসলাম সর্বশেষ মামলাটি দায়ের করেন গত ১১ ফেব্রুয়ারি। এতে ভুয়া একটি চেকে (চেক নং- ৯০২৬৪৬৩০) ১০ লাখ টাকার অংক বসিয়ে স্বাক্ষর দিয়ে প্রদানের অভিযোগ আনা হয় সাহেদের বিরুদ্ধে।
এরআগে গত বছরের ৪ মার্চ সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১ম আদালতে সাহেদের বিরুদ্ধে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার তিনটি প্রতারণা মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী শামসুল মাওলা। সাহেদের দেয়া ১০ লাখ টাকা করে ২ টি চেকে ২০ লাখ টাকা ও আরও একটি চেকে ৫০ হাজার টাকা নির্ধারিত সময়ে না পাওয়ায় এ ৩ মামলা করেন তিনি।
গত ৮ নভেম্বর সিলেট সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতের ওই তিন মামলার শুনানিতে বাদী পক্ষের আইনজীবী সাহেদকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য আবেদন করলে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই পরোয়ানার ভিত্তিতে ঢাকা থেকে মঙ্গলবার সাহেদকে সিলেটে নিয়ে আসা হয়।
উল্লেখ্য, করোনা টেস্টের ভুয়া রিপোর্ট প্রদান, অর্থ আত্মসাতসহ প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠার পর গত ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা সীমান্ত এলাকা থেকে রিজেন্ট গ্রুপ ও রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিম ওরফে মো. সাহেদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
এর আগে ৬ জুলাই রিজেন্ট হাসপাতালের উত্তরা ও মিরপুর শাখায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট, করোনা চিকিৎসার নামে রোগীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অনিয়ম উঠে আসে। পরে রোগীদের সরিয়ে রিজেন্টের উত্তরা ও মিরপুর শাখা সিলগালা করে দেয়া হয়।