করোনা মহামারি, তাইওয়ান, চীন সাগরের নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন ইস্যুতে চীনকে চাপে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বিরল খনিজ পদার্থগুলোর রফতানি বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে চীন।
চীনের শিল্প কর্মকর্তারা বলেছেন, সরকারী কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, দ্বিপাক্ষিক বিরোধের কারণে চীন যদি বিরল খনিজগুলো রফতানি নিষিদ্ধ করে তবে এটি মার্কিন ও ইউরোপের সংস্থাগুলোর উপরে কতটা খারাপ প্রভাব ফেলবে? তবে তিনি কারও নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে এই পদক্ষেপ স্মার্টফোন থেকে শুরু করে ফাইটার জেট পর্যন্ত সব ধরণের শিল্পের উপরেই প্রভাব ফেলবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিরল খনিজ সম্পদ উত্তোলন করে চীন। যে সব প্রতিষ্ঠান সেগুলো উত্তোলন ও প্রসেস করে তার উপরে সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
এ বিষয়ে চীনের সংশ্লিষ্ট কোন পক্ষই মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে দেশটির সরকার গত মাসে এই খাতটির জন্য খসড়া নির্দেশিকা জারি করেছিল। সেখানে প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে রফতানি নিয়ন্ত্রণের বিধি মেনে চলে তা নিশ্চিত করতে ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ ও পরিবেশ রক্ষায় বিরল খনিজ সম্পদ অনুসন্ধান ও প্রক্রিয়াজাতকরণকে সীমাবদ্ধ বা স্থগিত করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানানো হয়।
২০১৯ সালে দুই দেশের মধ্যে রফতানির একটি তুলনামূলক চিত্র প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মোট আমদানিকৃত বিরল খনিজের মধ্যে ৮০ শতাংশই যায় চীন থেকে।
চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্কের ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষিতে ওয়াশিংটনকে টার্গেট করে বেইজিং সে সময় বিরল খনিজ রফতানি সীমাবদ্ধ করার পরিকল্পনা তৈরি করেছিল। যদিও এই বিধিনিষেধগুলো কখনই কার্যকর হয় নি। তবে এটি মার্কিন সরকারকে সরবরাহের একক উৎসের উপর তাদের নির্ভরতা হ্রাস করার উপায় সন্ধান করার জন্য চাপ দেয়।
ট্রাম্পের প্রশাসন বহু উচ্চ প্রযুক্তির শিল্পগুলোতে আধিপত্য বিস্তার করার জন্য চীনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছিল। গত বছর ডোনাল্ড ট্রাম্প বিরল খনিজগুলোর দেশীয় উৎপাদন সম্প্রসারণের লক্ষ্যে একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। পরে চীনের বাইরে বিরল খনিজের বৃহত্তম উৎপাদক লিনাস রেয়ার আর্থস লিমিটেডের সাথে তাদের প্রক্রিয়াকরণ ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চুক্তি করে। সূত্র: ফিনান্সিয়াল টাইমস।