সৌদি আরবে বাংলাদেশি গৃহকর্মী আবিরন বেগমের হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সৌদি নাগরিক গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানীকে কেসাস বা জানের বদলে জান নিতে শিরশ্ছেদের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্টের আদালত স্থানীয় সময় রোববার এই রায় ঘোষণা করেন।
আদালত তা রায়ে প্রধান আসামি গৃহকর্ত্রী আয়েশা আল জিজানীর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্টভাবে ইচ্ছাকৃত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করায় শিরশ্ছেদের আদেশ দেন।
রায়ে গৃহকর্তা বাসেম সালেমের বিরুদ্ধে আলামত ধ্বংসের অভিযোগ, আবিরন বেগমকে নিজ বাসার বাইরে বিভিন্ন জায়গায় কাজে পাঠানো ও চিকিৎসার ব্যবস্থা না করা- এমন আলাদা আলাদা অভিযোগে মোট ৩ বছর ২ মাস কারাদণ্ডের আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাকে ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানাও করেন।
এই মামলার আরেক আসামি সৌদি দম্পতির কিশোর পুত্র ওয়ালিদ বাসেম সালেমকে সুনির্দিষ্টভাবে হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করার প্রমাণ পায়নি বলে জানান আদালত। তবে আবিরন বেগমকে বিভিন্নভাবে অসহযোগিতা করায় তাকে সাত মাসের জন্য কিশোর সংশোধনাগারে থাকার আদেশ দেন।
রায়ের বিরুদ্ধে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালত।
সৌদি আরবে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশি নাগরিককে হত্যার বিচারে কোনো সৌদি নাগরিকের প্রাণদণ্ড হলো।
এর আগেই আবিরনের মৃত্যুতে দুঃখ প্রকাশ করেন আদালত। হত্যার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে সৌদি শরিয়া আইন অনুযায়ী যথাযথভাবে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বলেও আদালত উল্লেখ করেছেন।
২০১৯ সালের ২৪ মার্চ রিয়াদের আজিজিয়ায় আবিরন বেগম সৌদি গৃহকর্ত্রীর নির্যাতনে নিহত হন। পরবর্তীতে তা হত্যাকাণ্ড বলে হাসপাতালের ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায়।
রোববার রিয়াদের ক্রিমিনাল কোর্টের ৬ নম্বর আদালতে আবিরন বেগমের মামলা পরিচালনার জন্য দূতাবাসের শ্রম উইংয়ের প্রথম সচিব সফিকুল ইসলাম ও আইন সহায়তাকারী সোহেল আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী আবিরন বেগম হত্যা মামালার রায় ঘোষণার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করার জন্য সৌদি সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।