তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আবার মিডিয়া কভারেজও চায় দলটি। তাই দলটির নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধ ও গণ্ডগোল করে খবরের শিরোনাম হতে চায়।
রোববার রাজধানীর তোপখানা রোডে প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতীয় পতাকা ও প্রেস কাউন্সিলের পতাকা উত্তোলন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসটি উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, সচিব খাজা মিয়া ও প্রেস কাউন্সিল প্যানেল চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রেজাউর রহমান।
বিএনপির সমাবেশে পুলিশি হামলার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কালকের ঘটনার পর বিএনপি নেতাদের বক্তব্য আমি কাগজে এবং টেলিভিশনে দেখেছি। ২ কোটি মানুষের ঢাকা শহরে কয়েকশ মানুষের সমাবেশ যদি বিশাল সমাবেশ হয়, তাহলে বিএনপির জন্য পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসছে এবং বুঝতে হবে তারা জনগণ থেকে কতটুকু বিচ্ছিন্ন।
শনিবার তারা খবরের শিরোনাম হতেই গণ্ডগোল ঘটিয়ে মারমুখী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে পুলিশের অনুরোধ সত্ত্বেও রাস্তা অবরোধ করে জনজীবনে বাধা সৃষ্টি করেছিল। তাই পুলিশও জনগণের সুবিধার্থে তাদের দায়িত্ব পালন করেছে। সমাবেশ তো চট্টগ্রামসহ আরও বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে, কোথাও তো এ ধরনের গণ্ডগোল হয়নি।
হঠাৎ করেই সরকার পতনের খবর পাওয়া যাবে, বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন বক্তব্যের বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ কথার দুই ধরনের ব্যাখ্যা হয়। একটি হচ্ছে, তারা ভেতরে ভেতরে বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে যেভাবে ষড়যন্ত্র করেছিল, আমাদের সরকারের বিরুদ্ধেও ক্রমাগত ১২ বছর ধরে নানা ধরনের ষড়যন্ত্রে করে আসছে। জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন দৈব-দুর্বিপাকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রেস কাউন্সিলের ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন করতে যাচ্ছি, যাতে প্রেস কাউন্সিল বাস্তবতার নিরিখে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, তাদেরকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তা সুচারুভাবে পালন করতে পারে, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং দায়িত্বশীলতা দু’টিই নিশ্চিত করতে পারে,বলেন তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং গণমাধ্যম যাতে সমাজের দর্পণ হিসেবে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে, ভুল এবং অসত্য সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকে এবং সেটি হলে যাতে প্রতিকার হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরপরই ১৯৭৪ সালে প্রেস কাউন্সিল গঠন করেছিলেন। প্রেস কাউন্সিল তখন থেকেই অত্যন্ত দায়িত্বশীলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা একটি বহুমাত্রিক সমাজ ব্যবস্থা বিনির্মাণে কাজ করছি। আজ দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন দেশে-বিদেশে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের ব্যাপারেও আমাদেরকে সজাগ থাকতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবো।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে প্রেস কাউন্সিল দিবস উপলক্ষে প্রেস কাউন্সিল সংশ্লিষ্ট সকলকে এবং সকল গণমাধ্যমকর্মীকে শুভেচ্ছা জানান। আগামী দিনগুলোতে প্রেস কাউন্সিল আরো কার্যকর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রেস কাউন্সিল প্যানেল চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান ও তথ্যসচিব খাজা মিয়া এবং প্রেস কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে সিনিয়র সাংবাদিক ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু বক্তব্য রাখেন।