মিয়ানমারে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত পুলিশের সপক্ষ ত্যাগের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, বিষয়টি জান্তার জন্য সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার নেপিদোতে বিক্ষোভের সময় থুন অং কো কো নামের একজন লেফটেন্যান্ট সপক্ষ ত্যাগ করে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের মাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি ভালোভাবেই অবগত যে, গণতন্ত্রের পক্ষে আমাদের লড়াই ব্যর্থ হলে আমাকে জেলে ঢোকানো হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সাজা দেওয়া হবে।’ বুধবার পূর্বঞ্চলীয় কিয়াহ রাজ্যের রাজধানী লুইকাও পুলিশ বিভাগের উর্দিধারী ৪৯ জন কর্মকর্তা বিদ্রোহ করেন। -আল জাজিরা
‘স্বৈরশাসনকে না বলুন’ ব্যানার নিয়ে তারা মার্চ করেন। থিনজার বলেন, কেবল পুলিশ নয়। পদধারী ও কর্মরত সেনারাও যোগ দেবেন স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিবাদে। আমার আশা, এটি সম্ভব। কারণ, গত কয়েক বছরে অধিকার লঙ্ঘনের শিকার কিছু সেনা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার সেনাবাহিনীর ফেসবুক পেজে সামরিক শাসক ও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিবেকহীন’ মানুষ সরকারি কর্মচারীদের কাজে যোগ না দিতে উসকানি দিচ্ছে। বিবৃতিতে ‘যারা কাজে যোগদান থেকে বিরত রয়েছেন, তাদের দেশ ও জনগণের স্বার্থে দ্রুত কাজে যোগদানের’ জন্য অনুরোধ করা হয়। এদিকে নিজেদের শাসন পোক্ত করতে জোর দমন-পীড়ন করে যাচ্ছে জান্তাবাহিনী। গ্রেফতার, হুমকি, দমন-নির্যাতন ও গুম করে বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করছে জান্তা। মতপ্রকাশের স্বাধীনতাবিষয়ক কর্মী মুং সাউঙ্খা বলেন, কিছু মানুষ সামরিক বাহিনীকে ২০২০ সালের নির্বাচনের ফল মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।
এগিয়ে যাওয়ার জন্য সবার সংহতি দরকার। ছাত্র, শ্রমিক, এমনকি সেনা-পুলিশসহ সবাই সংহতি প্রকাশ করলে জান্তা হটানো সম্ভব হবে। মাত্র ১০ বছরের গণতন্ত্রকে ছুড়ে ফেলে ১ ফেব্রুয়ারি ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনী। দ্বিতীয়বারের মতো বিপুল ভোটে জয়ী দল এনএলডি-প্রধান অং সান সু চিসহ প্রেসিডেন্ট ও জ্যেষ্ঠ নেতা-মন্ত্রীদের গ্রেফতার করা হয়। প্রতিক্রিয়া দেখানো নিয়ে প্রথমে সংশয়ে থাকলেও সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতার কৌশল নিয়ে আন্দোলনের মাঠে নামে বিক্ষুব্ধ মানুষ। অসহযোগিতা বা সরকারের আদেশ অমান্য করার আন্দোলনে যোগ দেয় হাজারো চাকরিজীবী। এতে ডাক্তার, নার্স, আইনজীবী, রেলকর্মী, সরকারি কর্মী, ব্যাংকার, কৃষক, শ্রমিক এবং কিছু পুলিশ সদস্যও যোগ দিয়েছেন। এভাবে সরকারি কাজে অচলাবস্থা তৈরি হলে জান্তা সরে দাঁড়াতে বাধ্য হবে বলে মনে করে মিয়ানমারের জনগণ।