সামরিক অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে মিয়ানমারে চলমান বিক্ষোভে, সেনাবাহিনীর মানবতা লঙ্ঘনের অপরাধের তদন্ত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের সদস্যরা। সংস্থার মানবাধিকার সংরক্ষণ কাউন্সিলে লেখা এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান মিয়ানমারের প্রায় ৩০০ এমপি। এদিকে জাতিসংঘের মিয়ানমারবিষয়ক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চলমান বিক্ষোভে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সরাসরি গুলি চালানোর প্রমাণ আছে।
আগের দিনগুলোর ধারাবাহিকতায় মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরে সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। তারা জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। আন্দোলনকারীরা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে চাপ প্রয়োগের জন্য, চীনসহ অন্যান্য দেশের দূতাবাসের সামনেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
চলমান আন্দোলনের মধ্যেই মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অপরাধের তদন্ত করতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের সদস্যরা।
এমন অবস্থার মধ্যেই জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় মিয়ানমারবিষয়ক প্রতিনিধি জানিয়েছেন, চলমান বিক্ষোভে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সরাসরি গুলি চালানোর প্রমাণ আছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণকে দেশটির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে অবহিত করেছে জাতিসংঘ।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের ডেপুটি হাইকিশনার নাদা আল নাসিফ বলেন, ‘কঠিন লড়াইয়ের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার পর মিয়ানমার আবারো সংকটের মধ্যে পড়েছে। দেশটিতে যে অভ্যুত্থান হয়েছে, তা সাধারণ নাগরিকদের জন্য চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’
তবে দেশের কল্যাণে সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করেছে বলে দাবি করেছেন জাতিসংঘে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত।
জাতিসংঘে নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত মিন্ট তিউ জানান, নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির পর যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে সামরিক বাহিনীর জন্য অন্য কোনো বিকল্প ছিল না। সংবিধান রক্ষার জন্যই সেনাবাহিনী ক্ষমতা গ্রহণ করেছে।
অন্যদিকে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলনকে বিবেকবর্জিত আখ্যা দিয়ে সরকারি কর্মীসহ সবাইকে কাজে যোগ দেয়ার আহ্বান জানান মিয়ানমারের সেনাপ্রধান।