যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে পর্যন্ত নিজের হার স্বীকার করেননি তিনি। উল্টা ভোট গণনায় কারচুপির অভিযোগ তুলে একের পর এক মামলা ঠুকেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই মামলার ধাক্কা সামলাতেই আপাতত হিমশিম খাচ্ছেন আমেরিকার সাধারণ মানুষ। একগুচ্ছ মামলা আর ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডবের পরে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের খরচ প্রায় ৫২ কোটি ডলারে এসে ঠেকেছে। পুরো অর্থই যাচ্ছে সাধারণ করদাতাদের পকেট থেকে। স্থানীয়, রাজ্য ও ফেডারেল সরকারের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার ও সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরে এমনটাই দাবি করেছে একটি প্রথম সারির আমেরিকান দৈনিক। বিদায়ী প্রেসিডেন্টের এই খামখেয়ালি আচরণের দায় কোভিড-বিধ্বস্ত দেশের সাধারণ মানুষ কেন নেবেন, সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সামনের সপ্তাহেই ট্রাম্পের ইমপিচমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। জানুয়ারির গোড়ায় ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্প-সমর্থকদের তাণ্ডবের আগে বিদায়ী প্রেসিডেন্টের বক্তৃতা কতটা উস্কানিমূলক ছিল, তা নিয়ে তদন্ত হওয়ার কথা। ট্রাম্পের আইনজীবীদের অবশ্য বক্তব্য, একজন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে গণনায় কারচুপি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অধিকার ট্রাম্পের ১০০ শতাংশ ছিল। বিদায়ী প্রেসিডেন্ট সেই প্রশ্ন তুলে আইনি দিক দিয়ে কোনো ভুল করেননি।
তবে ক্যাপিটলে তাণ্ডবের দায় থেকে ট্রাম্প খুব সহজে মুক্তি পাবেন না বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ ক্যাপিটল ভবনে ভাঙচুর হওয়া জিনিস মেরামতিতে খরচ তো লেগেইছে। সেই সঙ্গে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানে যে পরিমাণ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করতে হয়েছিল, এক ধাক্কায় তার খরচই প্রায় ৪৮ কোটি ডলারে গিয়ে ঠেকেছে।
তবে শুধু ফেডারেল সরকারই নয়, ক্যাপিটল তাণ্ডবের পরে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারের ওপরেও নিরাপত্তার কারণে খরচের হার আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গেছে। ক্যালিফর্নিয়ায় গত ১৪ থেকে ২১ জানুয়ারি ন্যাশনাল গার্ডের এক হাজার সদস্যকে মোতায়েন করা হয়েছিল। যার খরচ পড়েছে প্রায় ১.৯ কোটি ডলার। অর্থ দফতরের মুখপাত্র এইচ ডি পামার একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্টই জানিয়েছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর খাতে এই বরাদ্দ এক কথায় প্রচুর। তার দাবি, ওই এক সপ্তাহে যে অর্থ খরচ হয়েছে, তা আগের অনেক হিসেবকে ছাপিয়ে গেছে। ওহায়ো বা ইউটার কর্মকর্তারাও জানিয়েছেন, খরচ সামলাতে নাজেহাল অবস্থা তাদের।
এই অবস্থায় হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার তথা ডেমোক্র্যাট নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি জানিয়েছেন, এই খরচের ধাক্কা থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচানোর জন্য সরকারি তহবিল থেকে কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে চিন্তা ভাবনা চলছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা