ব্যাটারি বা শক্তিকোষ বদলে দিয়েছে বিশ্ব। যার কল্যাণে হাতঘড়ি, ল্যাপটপ আর স্মার্টফোনের মতো হাজারো পণ্যের নিত্য আনাগোণা দৈনন্দিন জীবনে। শুধু ইলেক্ট্রনিক্স পণ্যে নয়, বৃহৎ আকারের শক্তিকোষ ভূমিকা রাখছে নবায়নযোগ্য উৎসের বিদ্যুৎ ধারণ ও তা মূল গ্রিডে সরবরাহে।
এমনই একটি ব্যাটারি তৈরি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ায়। তবে এটি হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ শক্তিধারক। দেশটিতে নবায়নযোগ্য শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিশাল এক প্রকল্পের গতি এগোনোর সাথে সাথে, নতুন ব্যাটারিটি নির্মাণের উদ্যোগও শুরু হয়েছে।
প্রকল্পটি চলছে অস্ট্রেলিয়ার কয়লা খনি শিল্পের জন্য পরিচিত নিউজ সাউথ ওয়েলস রাজ্যে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে আছে বর্তমানে আকারের দিক থেকে বিশ্বের এক নম্বর শক্তিকোষ। কিন্তু, অস্ট্রেলীয় প্রকল্পের ব্যাটারিটি হবে তার চাইতেও তিনগুণ বড়।
প্রকল্পে অর্থায়নকারী সংস্থা নবায়নযোগ্য জ্বালানি তহবিল- সিইপি এনার্জি পিটিওয়াই ২০২২ সালের শুরুর দিকে এটি তৈরির কাজ শুরু করবে। আর ওই বছরই সেটি চালু করা হবে বলে আজ শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে জানায় সংস্থাটি।
বিবৃতিতে সংস্থার চেয়ারম্যান মরিস লেম্মা বলেন, “নবায়নযোগ্য শক্তির নিরবিচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত করতে এবং তার মাধ্যমে কয়লা ও গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরে আসার পদক্ষেপে; বড় আকারের ব্যাটারিগুলো প্রধান ভূমিকা পালন করবে।”
এই প্রকল্পের মাধ্যমে সাউথ ওয়েলসের হান্টার ভ্যালি এলাকা কয়লা খনি শিল্প কেন্দ্রের বদলে পরিবেশ সহযোগী অঞ্চল হিসেবে সুপরিচিতি লাভ করবে, বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অস্ট্রেলিয়ায় রয়েছে বিপুল সৌর এবং বায়ু থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা। ইতোমধ্যেই অনেক বিনিয়োগ তহবিল এধরনের পরিবেশ সহযোগী প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। ব্লুমবার্গ এনইএফ সূত্রমতে, চলতি বছরেই ৮০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ প্রকল্পে অর্থায়নের কাজ শেষ হবে। এপর্যন্ত খাতটিতে যে পুঁজি এসেছে, এই একবছরেই তার দ্বিগুণ হবে। ফলে, নতুন মাত্রা পেয়েছে নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন। সাম্প্রতিক সময়ে একারণেই দেশটিতে অনেক বড় ব্যাটারি তৈরির উদ্যোগ দেখা যায়।
২০১৭ সালে মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষতম ধনী ইলন মাস্ক বাজি ধরে বলেছিলেন, তিনি মাত্র ১০০ দিনের মধ্যে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় ১০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার ব্যাটারি তৈরি করতে পারবেন। তারপর, থেকেই পূর্ণদ্যমে বড় ব্যাটারির প্রযুক্তিতে বিশ্বের মাঝে এগিয়ে গেছে এই অঞ্চল।
গত মাসে অরিজিন এনার্জি লিমিটেড নামের আরেকটি কোম্পানি জানায়, তারা নিউ সাউথ ওয়েলসে ৭০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি শক্তিকোষ তৈরির কথা ভাবছে। ফরাসী সংস্থা নিওন এসএ ওই অঞ্চলে ৫০০ মেগাওয়াটের একটি এবং ভিক্টোরিয়া প্রদেশে ৩০০ মেগাওয়াটের আরেকটি ব্যাটারি স্থাপন করতে চায়।