spot_img

দেশজুড়ে চলছে তীব্র শীতের কাঁপন

অবশ্যই পরুন

গতকাল রোববার উত্তর জনপদের কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাটে তাপমাত্রার পারদ নেমে আসে ৫.৫, রাজশাহীতে ৫.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। যা চলতি শীত মওসুমে এ যাবত সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড। ঢাকায়ও পারদ নেমেছে ১১.৭ ডিগ্রিতে। রাত থেকে ভোর ও সকালের তাপমাত্রা হ্রাসের সাথে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগ তথা উত্তরাঞ্চলসহ দেশের অনেক এলাকায় দিনের বেলাতেই পারদ অস্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে গেছে। গতকাল নীলফামারী জেলার ডিমলায় দিনের তাপমাত্রা ১৪.২, রংপুরে ১৪.৬, সৈয়দপুরে ১৫ ডিগ্রি সে. রেকর্ড করা হয়েছে। এ অবস্থায় মাঘের তৃতীয় সপ্তাহে এসে শীতের কষ্ট ও নানামুখী ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ সূত্র জানায়, শীতের তীব্রতা সৃষ্টিকারী উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের একটি বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও এর সংলগ্ন বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থান করছে। তাছাড়া বঙ্গোপসাগর থেকে আসা গরম বাতাসের সাথে হালকা ও নিচু মেঘ ইতোমধ্যে সরে গেছে। উত্তর-পশ্চিম ও উত্তর দিক থেকে ঘণ্টায় ৫ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাংলাদেশে আসছে হিমালয় ছুঁয়ে আসা হিমেল হাড় কনকনে হাওয়ার স্রোত।
সেই সঙ্গে বিরাজ করছে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা। কমেছে বাতাসে জলীয়বাষ্পের আধিক্য। এরফলে দিনের বেলায়ও বিশেষত উত্তরাঞ্চলে অস্বাভাবিক হারে কমে গেছে সূর্যের রোদের তেজ। আজ সোমবার এবং আগামীকাল মঙ্গলবারও দেশের অনেক স্থানে মাঝারি থেকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।

মাঘের প্রচন্ড শীতে হতদরিদ্রদের কষ্ট-দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে খড়কুটো পুড়িয়ে দরিদ্র মানুষেরা শীতকষ্ট নিবারণের চেষ্টা করছে। উত্তর জনপদের চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের ভোগান্তি অসহনীয়। শীতের তীব্রতার সাথে সর্দি-কাশি, জ¦র, শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, টনসিল, সাইনাস ও ফুসফুসের জটিলতা, চর্মরোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে।

দিন এনে দিন খাওয়া দিনমজুর, কৃষিশ্রমিক, খেটে খাওয়া মানুষজনের আয়-উপার্জনে ভাটা পড়েছে। ভোর-সকাল হয়ে প্রায় দুপুর অবধি দীর্ঘক্ষণ হিমেল হাওয়ার সাথে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশাপাতের কারণে সড়ক মহাসড়ক, নৌপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত এবং ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলা-উপজেলায় ঝিরঝির বৃষ্টির মতোই পড়ছে কুয়াশা।

গেল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ২২.১ এবং সর্বনিম্ন ১১.৭ ডিগ্রি সে.। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৯.৬ ডিগ্রি। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ২৪.৬ এবং সর্বনিম্ন ১৫.১ ডিগ্রি সে.। গতকাল দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চল, সিলেট অঞ্চল, মধ্যাঞ্চল, দক্ষিণাঞ্চলের অনেক জেলায় পারদ নেমে আসে সাড়ে ৫ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে।

আজ সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী জেলার উপর দিয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ময়মনসিংহ বিভাগ এবং রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায়, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, নিকলি, শ্রীমঙ্গল, যশোর, খুলনা, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, বরিশাল ও ভোলা অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগে রাতের তাপমাত্রা কিছুটা হ্রাস পেতে পারে। দেশের অন্যত্র রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে।

সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরের ৫ দিনে রাতের তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।

সর্বশেষ সংবাদ

মহানবী (সা.) রওজা শরিফ জিয়ারতে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা

এখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ