কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা। চীন ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূত এবং ভারতের হাইকমিশনার তাদের বক্তব্যে বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন। গত এক দশকের অর্জনকে অনন্য ও অতুলনীয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চতুর্থ দফা ও চলতিবারে দুই বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটি আয়োজিত ‘পলিটিক্যাল লিডারশিপঃ দ্যান এন্ড নাউ’ শীর্ষক বিশেষ ওয়েবিনারে যোগ দিয়ে তারা এ বক্তব্য দেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিং বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার গত এক দশকে বাংলাদেশের পক্ষে যা অর্জন করেছে তা পুরোই ব্যতিক্রমী। বাংলাদেশ ও চীন দুদেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে সহযোগিতার বড় সুযোগ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকার যে উন্নয়ন অর্জন করেছেন তা যে কোনো দেশের তুলনায় অনন্য। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের প্রতিশ্রুতি অপরিবর্তিত এবং দুই দেশের সম্পর্কের শেকড় যে কোনো কৌশলগত অংশীদারিত্বকে ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দেশের অগ্রগতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে স্বীকৃত। জাতি হিসেবে টেকসই উন্নয়নের পথে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান বাঘ। রাষ্ট্রদূত তুরান প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশি জনগণের নমনীয়তার প্রশংসা করেন।
ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারী ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে ‘লিডারশিপ ম্যাটারস: হাউ শেখ হাসিনা ইজ লিডিং বাংলাদেশ দো দ্যা পেনডেমিক” শীর্ষক একটি নতুন প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হয়। এছাড়া মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব: গ্লোবাল লিডার ট্রান্সমেন্ডিং টাইম অ্যান্ড বাউন্ডারিস’ নামে একটি প্রকাশনার উন্মোচন হয়।
ড. শাম্মী আহমেদ তার স্বাগত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ১২ বছরের সময় সরকার প্রধান হিসাবে পদ্মা সেতু, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাস, নারীর ক্ষমতায়নের মতো বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রগতি ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি মহামারীর কঠিন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা যে নেতৃত্ব দেখিয়েছেন, তা উল্লেখ করেন। এছাড়া রোহিঙ্গা সঙ্কটের মতো মানবিক ইস্যুতে শেখ হাসিনা কীভাবে পাশে দাড়িয়েছেন এবং এ প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করেছেন, সে বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
প্রকাশনাটির উদ্বোধন করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আবদুল মোমেন তার বক্তব্যে, সোনার বাংলা গড়ার ক্ষেত্রে জাতির পিতার নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। মহামারি চলাকালীন খাদ্য, ফসল ও আশ্রয় নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনিক ব্যবস্থার নানা দিক তুলে ধরেন ড. মোমেন। তিনি অর্থনীতি ও সমাজের উপর মহামারির বিরূপ প্রভাব হ্রাস করার৷ উপায় হিসেবে প্রধানমন্ত্রী যে সুরক্ষা কর্মসূচি এবং উদ্দীপনা প্যাকেজগুলি রেখেছেন, তার প্রশংসা করেন।
সমাপনী বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ জমির বলেন, শেখ হাসিনার বাস্তববাদী ও সময়োপযোগী নীতিমালা কর্মসূচির কারণে আজকের বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের রোল মডেল।তিনি মহামারি চলাকালীন প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। বিশ্বের সকল দেশের মধ্যে এবং বিশেষত এশীয় দেশগুলির মধ্যে কোভিড -১৯ এর প্রভাব মোকাবিলা করতে পারস্পরিক সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
আলজেরিয়া, ভিয়েতনাম এবং কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতদের পাশাপাশি অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের মিশনসমূহের কূটনৈতিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ জানান, আজ প্রকাশিত দুটি বিষয়বস্তু, অর্থাৎ ভিডিও ডকুমেন্টারি এবং স্মৃতি প্রকাশনা শিগগিরই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ এবং ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করা হবে।