spot_img

দরিদ্র দেশগুলোকে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৩ পর্যন্ত

অবশ্যই পরুন

ওয়ার্ল্ড হেল্থ ওর্গানাইজেশন-ডব্লিউএইচও ঘোষণা করেছে যে, করোনা ভ্যাকসিনের অসম আন্তর্জাতিক বিতরণের কারণে বিশ্ব ‘একটি বিপর্যয়কর নৈতিক ব্যর্থতার দ্বারপ্রান্তে’ অবস্থান করছে। গেল ১৮ জানুয়ারি ডব্লিউএইচও ’র মহাপরিচালক টেড্রস অ্যাধনম ঘেব্রেইসাস সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত, এসব কার্যকলাপ মহামারিকে দীর্ঘায়িত করবে, এটিকে ঠেকানোর জন্য প্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ এবং মানবিক ও অর্থনৈতিক দুর্ভোগকে বাড়িয়ে তুলবে।’

দি ইকোনমিস্টের সহযোগী সংস্থা ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)-এর একটি প্রতিবেদন অনুরূপ পূর্বাভাস দিয়ে বলেছে, আমেরিকা, ব্রিটেন এবং বেশিরভাগ ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ প্রমাণিত ভ্যাকসিনের অ্যাক্সেস পাওয়া দেশগুলো মার্চের মাঝামাঝি নাগাদ তাদের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নাগরিকদের টিকা দেয়া সম্পন্ন করবে। (ব্রিটিশ ওষুধ নির্মাতা অ্যাস্ট্রাজেনেকার বিলম্বিত ভ্যাকসিন সরবরাহের কারণে ইইউর সময়সূচিটি পিছিয়ে যেতে পারে) অন্যান্য ধনী দেশগুলো সম্ভবত জুনের মধ্যে সেই কাজটি সম্পন্ন করবে।

তবে, বেশিরভাগ মধ্য আয়ের দেশ ২০২২ সালেও এ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হবে না। একমাত্র ব্যতিক্রম রাশিয়া। তার উৎপাদিত ‘স্পুতনিক ভি’ ভ্যাকসিনের কল্যাণে তার জনগণকে করোনা টিকাদানের কাজটি সম্পন্ন করতে পারে। (চীন ও ভারতেরও নিজস্ব ভ্যাকসিন রয়েছে, তবে তাদের জনসংখ্যার আকারের ফলে সম্ভবত টিকাদানের দ্রæততায় পিছিয়ে থাকবে) এবং দরিদ্র দেশগুলোকে জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসার জন্য পর্যাপ্ত টিকাদানের জন্য ২০২৩ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

এর বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনগুলোর সীমিত সংস্থান এবং উৎপাদন সীমাবদ্ধতা কয়েক বছর ধরে বিশ্বব্যাপী সরবরাহকে স্তিমিত করে দেবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণেই প্রায়োগিক পরীক্ষায় ভ্যাকসিনগুলো নিরাপদ এবং কার্যকর ঘোষণা করার বহু আগেই বেশিরভাগ দেশ গত বছর ফার্মাসিউটিক্যাল সংস্থাগুলোর সাথে চুক্তি করতে হামলে পড়েছিল। মূল ভ্যাকসিন উৎপাদকরা ২০২১ সালের মধ্যে যে ১২.৫ বিলিয়ন ডোজ দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল, তার মধ্যে ৬.৪ বিলিয়ন ইতোমধ্যে অর্ডার করা হয়ে গেছে। প্রধানত ধনী দেশগুলো তাদের জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় টিকার চেয়ে আরও অনেক বেশি ডোজ ভ্যাকসিন কিনে নিয়েছে।

বেশিরভাগ দরিদ্র দেশকে ডবিøউএইচও’র সহ-নেতৃত্বে ভ্যাকসিন বিলিকরণ জোট কোভ্যাক্সের উপর নির্ভর করতে হবে। কোভ্যাক্স প্রতিটি দেশের জনসংখ্যার কেবলমাত্র ২০ শতাংশের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে করোনা টিকা সরবরাহ করতে পারবে এবং এমনকি তা সময় মতো সরবারাহ করা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ ধনী দেশগুলো তাদের নিজেদের জন্য যথেষ্ট মনে না করা পর্যন্ত ভ্যাকসিন মজুদ করতে থাকবে। এমনকি তারা যথেষ্ট টিকা মজুদ করার পরেও, দরিদ্র দেশগুলোকে তাদের নাগরিকদের টিকা দেয়ার ব্যয় এবং রসদ নিয়েও লড়াই করতে হতে পারে।

যেসব দেশ খুব শিগগিরই ভ্যাকসিন উপলব্ধ করতে পারবে, তারা নিঃসন্দেহে খুব কম কোভিড সংক্রমণ, হাসপাতাল এবং মৃত্যুর মুখোমুখী হবে। দ্রæততম টিকাদানের অর্থনৈতিক সুবিধাগুলোও থাকবে। ইআইইউ পূর্বাভাস দিয়েছে যে, সমৃদ্ধ দেশগুলোর টিকা দেয়ার প্রচেষ্টা চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।

তবে ডবিøউএইচও হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, দরিদ্র দেশগুলোতে দীর্ঘ লকডাউনের প্রভাব তাদের বাণিজ্য ও সরবরাহ চেইনেও পড়বে এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং ভ্যাকসিনের ক্রমাগত চাহিদা কিছু দেশকে তাদের আধিপত্য বিস্তারের নতুন উপায় দেবে। রাশিয়া এবং বিশেষত চীন ইতোমধ্যে ‘ভ্যাকসিন ক‚টনীতিতে’ জড়িত হতে শুরু করেছে। তারা বিশ্বব্যাপী তাদের প্রভাব বাড়ানোর অন্যতম উপায় হিসাবে সারির পেছনে থাকা দেশগুলোকে তাদের তৈরি ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছে।
সূত্র : দ্য ইকোনোমিস্ট।

সর্বশেষ সংবাদ

মুজিববর্ষের নামে ভাস্কর্য-ম্যুরালে হাজার হাজার কোটি টাকা নষ্ট: শফিকুল আলম

মুজিববর্ষের নামে কত টাকা অপচয় করা হয়েছে তা বর্তমান সরকার খতিয়ে দেখছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ