প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ রুখতে উত্তর-পূর্ব ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসে রাতের বেলায় কারফিউ জারি হয়েছে। যদিও সেই কারফিউয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভকারীদের আন্দোলন এরই মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে।
গত শনিবার (২৩ জানুয়ারি) ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেলথ ঘোষণা করেছিল, নেদারল্যান্ডসে সংক্রমণের নতুন ঢেউ আসন্ন এবং তা দ্রুত ছড়াবে। এরপরই দেশজুড়ে রাতে কারফিউয়ের ঘোষণা করে সরকার। অন্য দিকে লকডাউন এখনো অব্যাহত আছে। ফলে বার, রেস্তোরাঁ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট গত ডিসেম্বর থেকে সব বন্ধ রয়েছে। খবর ডয়চে ভেলের
দেশটিতে সব শহরে রাত ৯টা থেকে ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কারফিউ জারি রয়েছে। কারফিউ ভাঙলে ৯৫ ইউরো জরিমানার বিধান করা হয়েছে। ফলে এ পর্যন্ত কয়েকশ’ মানুষকে জরিমানা করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখ পর্যন্ত কারফিউ বহাল থাকবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এই প্রথম নেদারল্যান্ডসে রাতে কারফিউ জারি হয়েছে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে রাজধানী হেগ, অ্যামস্টারডাম, রটারডামসহ নেদারল্যান্ডসের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভকারীরা কারফিউ ভেঙে রাস্তায় নামে। বেশ কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়। আগুন দেয় কয়েকটি দোকানে। চলে লুটপাট। বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে।
বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগই তরুণ। তাদের দাবি, অবিলম্বে রাতের কারফিউ তুলে দিতে হবে, নাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ৷ সোমবার রাতে যারা তাণ্ডব চালিয়েছে তাদের বয়স ১৩ থেকে ৩০-এর মধ্যে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অন্তত ১৮৪ জনকে।
করোনা টেস্টিং সেন্টারে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। এছাড়া কেএফসিসহ আমস্টারডামের বেশ কয়েকটি দোকানে ভাংচুর চালায়। গণমাধ্যমগুলো বলছে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন শহরে দাঙ্গা ছড়ানোর আহ্বান জানানো হচ্ছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দাঙ্গা পুলিশ নামানো হয়েছে। মেয়র আহমেদ আবু তালেব জরুরি ডিক্রি জারি করেছেন। এই ডিক্রির ফলে পুলিশ বিশেষ ক্ষমতায় সহজেই কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে।
নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে এই বিক্ষোভের নিন্দা জানিয়ে এটাকে ‘অপরাধমূলক সহিংসতা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এর ফলে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা একে উল্লেখ করছেন ‘৪০ বছরের মধ্যে ভয়াবহ দাঙ্গা’ হিসেবে।