নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমদ খানকে মারধরের ঘটনায় ঢাকা-৭ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে জামিন দেননি হাই কোর্ট। তবে তাকে কেন জামিন দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল মঙ্গলবার এ রুল জারি করেছেন। সরকারকে ২ সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। আদালতে ইরফান সেলিমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত মোট ৫টি মামলা হয়েছে। এরমধ্যে ৪টি মামলায় জামিন পেয়েছেন তিনি। এ অবস্থায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে মারধর করার অভিযোগের মামলায় জামিন আবেদন করা হয়েছে। যেসব অভিযোগে মামলা হয়েছে তা জামিনযোগ্য। আদালত জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেছেন।
গতবছর ২৫ অক্টোবর সন্ধ্যার পর ধানমন্ডির কলাবাগান ক্রসিংয়ে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিয়েছিল ‘সংসদ সদস্য’ স্টিকার লাগানো হাজী সেলিমের গাড়ি। ঘটনার সময় সাংসদ হাজী সেলিম গাড়িতে ছিলেন না। তার ছেলে ইরফান ও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন। এরপর নৌবাহিনীর ওই কর্মকর্তা মোটরসাইকেল থামান এবং নিজের পরিচয় দেন।
এ সময় হাজী সেলিমের গাড়ী থেকে দুই জন ব্যক্তি নেমে লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফকে মারধর করে। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন। এ সময় ওয়াসিফের স্ত্রীকেও লাঞ্চিত করা হয়। ঘটনাস্থলে লোকজন জড়ো গেলে সংসদ সদস্যের গাড়ি ফেলে মারধরকারীরা পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে গাড়ি ও মোটরসাইকেলটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে গতবছর ২৬ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় ‘মারধর ও হত্যা চেষ্টা’ মামলা করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ। দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩০৭, ৩২৫, ৩৩২, ৩৪১, ৩৫৩, ৩৫৪ ও ৫০৬ নম্বর ধারায় এ মামলা করা হয়। মামলার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সাজা হতে পারে।
এ মামলায় সেদিনই ইরফান সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ মামলায় ইরফান সেলিম ঢাকার আদালতে জামিনের আবেদন করলে ওই আদালত গতবছর ২৭ ডিসেম্বর তা খারিজ করে দেন। এরপর হাই কোর্টে জামিন আবেদন করেন ইরফান সেলিম।