spot_img

১১০ বছরে করোনাকে পরাজিত করলেন নিউজার্সির হালিদা

অবশ্যই পরুন

নিউজার্সির টলউড কেয়ার সেন্টার। সেখানে গত সপ্তাহে বিশেষ একটি উপহার এলো। এটি হলো ১১০টি গোলাপের তোড়া। এর প্রতিটি গোলাপ হালিদা ব্রাউনের জীবনের এক একটি বছরের প্রতিনিধিত্ব করে। অর্থাৎ তিনি জানিয়ে দিলেন ১১০ বছর বয়সে তিনি এখনও বেঁচে আছেন। হালিদা ব্রাউন করোনা ভাইরাসকে পরাজিত করে সুস্থ হয়েছেন। তারপর গত ২০ শে জানুয়ারি তার বয়স হয়েছে ১১০ বছর। এ জন্য ওই কেয়ার সেন্টারের পাঠানো হয়েছে ১১০টি গোলাপ।

এর মধ্য দিয়ে হালিদা ব্রাউন সুপারসেন্টেনারিয়ান ক্লাবে পৌঁছে গেলেন। এই ক্লাবে ওইসব মানুষকে ধরা হয়, যাদের বয়স ১১০ বছর বা তারও বেশি। জেরোনটোলজি উইকি ওয়েবসাইট অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে এমন বয়সী মানুষ আছেন ৭৬ জন। নভেম্বরে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন হালিদা ব্রাউন। তারপর সুস্থ হয়ে তিনি ওই ক্লাবের মাইলস্টোন স্পর্শ করেছেন। এমন অর্জনে তার ‘গ্রেট-নাইস’ ক্রিস্টেন হাউ বলেছেন, আমরা পুরোমাত্রায় বিস্মিত। আমাদের পুরো পরিবার আনন্দে ভাসছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইউএসএ টুডে।

ক্রিস্টেন হাউ বলেছেন, মধ্য নভেম্বরে তাদের পরিবারে খবর যায় যে, হালিদা ব্রাউনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে গিয়েছিলেন এমন একজনের দেহে করোনা ভাইরাস পজেটিভ ধরা পড়েছে। এরপর তার পরিবারকে আরো জানানো হয় হালিদার রুমমেটও করোনা পজেটিভ। এর পর পরই হালিদা ব্রাউনের পরীক্ষা করানো হয়। তাতে তার করোনা ভাইরাস পজেটিভ ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে তাকে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়। হাউ বলেছেন, তখন তার মধ্যে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায়নি। আমাদের বড় উদ্বেগ ছিল, তাকে যারা দেখাশোনা করতেন তাদেরকে পালাক্রমে পাল্টানো হচ্ছিল। তাকে যেসব নার্স দেখাশোনা করতেন, যারা তার যত্ন নিতেন তাদের সবার সঙ্গে তার ছিল অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। কিন্তু আস্তে আস্তে হালিদা ব্রাউনের অক্সিজেন লেভেল কমে আসতে থাকে। এ সময় হালিদাকে সরবরাহ দেয়ার মতো মাত্র এক মাসের অক্সিজেন মজুত ছিল।


ক্রিস্টেন হাউ বলেছেন, সম্প্রতি আমাদেরকে বলা হয় তার আর বাড়তি অক্সিজেন প্রয়োজন নেই। তাকে তার রুমে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বেশ কয়েকদিন ধরে তিনি কিছু খাচ্ছিলেন না। ফলে তার স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ি। নিরাপত্তার কারণে কাচের জানালার ভিতর দিয়ে আমরা তাকে ওই কেয়ার সেন্টারে দেখতে যাই। দেখতে পাই তিনি সচেতন আছেন। কথা বলছেন। স্বাভাবিক কথা বলছেন।

গত বছর হালিদা ব্রাউনের বয়স ১০৯ বছর পূর্ণ হয়। তিনি এ নিয়ে সাক্ষাৎকার দেন অ্যাসবারি পার্ক প্রেস’কে। এটি হলো ইউএসএ টুডে নেটওয়ার্কের একটি অংশ। টলউডস কেয়ার সেন্টারের কর্মী এবং পরিচালক বোনি প্রিমিসাইল বলেছেন, এ বছর সাক্ষাৎকার দিতে পারেননি হালিদা ব্রাউন। আগে তিনি যেমন কথা বলতে পারতেন, এখন অতোটা কথা বলেন না। গত সপ্তাহে তার পরিবারের সদস্যরা তার সঙ্গে সাক্ষাত করতে এসেছিলেন। তাদেরকে দেখে তিনি খুব আনন্দ প্রকাশ করেছেন। পরিবারের সবাইকে তিনি চিনতে পেরেছেন।

বিখ্যাত টাইটানিক জাহাজ যে বছর ডুবে যায়, তখন তার বয়স ছিল এক বছর। ১৯১৮ সালে স্প্যানিশ ফ্লু মহামারির ভিতর দিয়ে তিনি বেঁচে আছেন। তার বয়স যখন ৩০-এর দশকে তখন তিনি নিজের বাসস্থান ছেড়ে নিউজার্সির ফোর্ট লি’তে চলে যান। চার দশক ধরে সেখানে তিনি একজন ওয়েট্রেস হিসেবে কাজ করেন। এরপর ১৯৮০ সালে অবসরে যান। ৯৩ বছর বয়সে না পৌঁছানো পর্যন্তু তিনি নিজের গাড়ি নিজেই চালাতেন। ১০৩ বছর বয়স পর্যন্ত হাঁটাচলা করেছেন। ১০৫ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি নিজের হাতে পোশাক বুনেছেন। জীবনের বেশির ভাগ সময় অন্যের সেবায় কাজ করেছেন। গত বছর তিনি বলেছিলেন, কে এত দীর্ঘদিন বেঁবে থাকে? আমাদের ১০ ভাইবোনের মওধ্যে শুধু আমিই বেঁচে আছি। বাকিরা সবাই মরে গেছে।

বিশ্বের সবচেয়ে বয়সী মানুষদের তালিকা করে জেরোনটোলজি রিসার্স গ্রুপ নামে একটি সংস্থা। এর রবার্ট ইয়াং বলেছেন, প্রতি ৪০ লাখ মানুষের মধ্যে একজন মাত্র মানুষ পাওয়া যায়, যিনি ১১০ বছর বা তারও বেশি পর্যন্ত বেঁচে থাকেন। জেরোনটোলজি উইকি’র তালিকায় এমন বয়সী আরো দু’জন মানুষ আছেন নিউজার্সির। তবে তাদের মধ্যে হালিদা ব্রাউনের বয়সটাই বেশি। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি বয়সী হিসেবে এখনও বেঁচে আছেন নর্থ ক্যালিফোর্নিয়ার হেস্টার ফোর্ড। তার বয়স এখন ১১৫ বছর। ওদিকে সারাবিশ্বে সবচেয়ে বেশি বয়সী জীবিত ব্যক্তি হলেন জাপানের কেন তানাকা। তার বয়স ১১৮ বছর। এ যাবত সবচেয়ে বেশি বয়সী মানুষের রেকর্ড করা হয়েছে ফ্রান্সে। সেখানে ১২২ বছর বয়স পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন জেনি কালমেন্ট। ১৯৯৭ সালে মারা যান তিনি।

সর্বশেষ সংবাদ

কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়: আইজিপি

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ