করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় সমাধান খুঁজছেন সারাবিশ্বের মাইক্রোবায়োলজির বিশেষজ্ঞরা। যখন চিকিৎসাবিদরা সংক্রমণ ঠেকাতে পরীক্ষা, টিকা ও চিকিৎসা ব্যবস্থার গবেষণায় ঘাম ঝরাচ্ছেন, তখন তুরস্কের বুরসার উলুদা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক উদ্ধাবন করলেন জীবাণুনাশক নেজাল স্প্রে। নাকে ব্যবহার করা এই স্প্রে এক মিনিটের মধ্যে করোনাভাইরাসের জীবাণু ধ্বংস করতে সক্ষম বলে দাবি করছেন তারা।
গেনোস্কেন নামের এই জীবাণুনাশক স্প্রে উলুদা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শেহিমে গুলসুন তেমেল, অপারেটর ড. আহমদ উমিদ সাবানজি ও ড. জুনায়েদ ওজাকিন যৌথ গবেষণায় উদ্ভাবন করেছেন।
স্প্রেটির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য উদ্ভাবনের সাথে সংশ্লিষ্ট গবেষকরা উলুদা বিশ্ববিদ্যালয় ও চুকুরোভা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিয়েছেন। পরীক্ষায় তারা ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছেন।
সাবানজি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস মহামারীর আগেই তিনি তার গবেষণা শুরু করেন।
তিনি বলেন, ‘জুনায়েদ ওজাকিনকে সাথে নিয়ে আমরা স্প্রেটির কার্যকারিতা দেখিয়েছি। যখনই মহামারী শুরু হয়, আমরা চিন্তা করলাম কোভিড-১৯ মোকাবেলায় আমরা এটিকে আরো উন্নত করতে পারি। সুতরাং আমরা নতুন এক ওর্যারল ও নেজাল স্প্রে তৈরি করলাম এবং পরীক্ষার জন্য পাঠালাম।’
সাবানজি আরো বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা জানি, ভাইরাসের সংক্রমণ মূলত মুখ ও নাক দিয়েই হয়। আমাদের গবেষণায় নিশ্চিত হয়েছি, স্প্রেটি মুখ ও নাকে লুকিয়ে থাকা ভাইরাস ধ্বংস ও প্রতিকার করতে পারে। স্বল্পসময়ে ভাইরাস ধ্বংস হওয়ায় ভাইরাসের কোষের মধ্যে প্রবেশ করে বংশবিস্তার রোধে বাধা দেয়া সম্ভব হয়।’
তেমেল জানান, গবেষণায় তারা দেখেন স্প্রেটি এক মিনিটের কম সময়ে ভাইরাস ধ্বংস করতে সক্ষম। পাশাপাশি তারা আরো লক্ষ্য করেন এটি মুখের ভেতরের পাতলা টিস্যুর কোনো প্রকার ক্ষতি করে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা আরো দেখিয়েছি, এটির কোষের ওপর আরোগ্য দানকারী প্রভাব রয়েছে। সুতরাং এটি ব্যবহার করা নিরাপদ এবং মানব কোষের ক্ষতি করে না।’
ওজাকিন জানান, তারা সাধারণ ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে এর কার্যকারিতা পরখ করেছেন। করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর তারা সার্স-কোভ-২ ভাইরাসকে গবেষণার লক্ষ্যে নিয়ে আসেন। প্রয়োজনীয় পরীক্ষার পর তারা দেখেন, স্প্রেটি নোভেল করোনাভাইরাসের ওপর সরাসরি প্রভাব বিস্তার করছে।
সূত্র : ডেইলি সাবাহ