পাকিস্তানি স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি পুলিশের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন শহিদ আসাদুজ্জামান আসাদ। ছাত্রসমাজের ১১ দফা কর্মসূচির মিছিলে নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ৫২ বছর আগে গণতন্ত্রের দাবিতে আন্দোলনে আত্মবলিদান দেওয়ার সেই দিনটি শহিদ আসাদ দিবস হিসেবে পালন করে আসছেন গণতন্ত্রকামী মানুষ।
আজ বুধবার (২০ জানুয়ারি) সেই শহিদ আসাদ দিবস। দিবসটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণীতে তারা বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে শহিদ আসাদের অসামান্য অবদান দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে আত্মত্যাগকারী শহিদ আসাদ এ দেশের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের মাঝে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
আসাদ শহিদ হওয়ার পর তিন দিনের শোক পালন শেষে ওই বছরের ২৪ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের ছয় দফা ও ছাত্রদের ১১ দফার ভিত্তিতে সর্বস্তরের মানুষের বাঁধভাঙা জোয়ার নামে ঢাকাসহ সারাবাংলার রাজপথে। সংঘটিত হয় ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান। পতন ঘটে আইয়ুব খানের। আরেক স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় বসে সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন।
সত্তর সালের সেই অভূতপূর্ব নির্বাচনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। কিন্তু ইয়াহিয়া ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নানা টালবাহানা শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় একাত্তর সালে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে বাঙালি। বিশ্ব মানচিত্রে জন্ম নেয় বাংলাদেশ নামে একটি নতুন দেশের। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের আন্দোলনে তাই শহিদ আসাদের আত্মত্যাগ এক উজ্জ্বল অধ্যায় হয়ে রয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেট সংলগ্ন শহিদ আসাদ স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
বুধবার সকাল ৮টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন আসাদ স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের সামনে শহিদ আসাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসব পার্টির কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর ইউনিটের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন।