spot_img

কম সুদে ১০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ আসছে

অবশ্যই পরুন

সুদের হার কমিয়ে অবশেষে আরো একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার এই প্যাকেজের আওতায় করোনার প্রভাব মোকাবেলায় দেশের কুটির, মাইক্রো ও ছোট উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) ঋণ প্রদান করা হবে। ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ হবে ৫০ লাখ টাকা। প্যাকেজ থেকে ঋণের সুদের হার হবে সাড়ে ৯ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাহক দেবে ৪ শতাংশ। অবশিষ্ট সাড়ে ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে। প্যাকেজটির মেয়াদ হবে ২ বছর। এর আগে এই প্যাকেজের সুদ হার সর্Ÿোচ্চ ১৪ শতাংশ করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল এবং মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়েছিল ৫ বছর। অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করে গত বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
জানা গেছে, এই প্যাকেজের অর্থ ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান (এমএফআই) তথা এনজিওদের মাধ্যমে দেয়া হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, ১০ হাজার কোটি টাকার তহবিল বাংলাদেশ ব্যাংক গঠন করবে এবং এটি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি ‘ক্রেডিট ফ্যাসিলিটি’ তৈরি করবে। শুধু চলতি মূলধন খাতে এ প্রণোদনা ঋণ দেয়া হবে। প্রান্তিক গ্রাহক পর্যায়ে ঋণসীমা হচ্ছে কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা, ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে ৩০ লাখ টাকা ও ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের সর্বোচ্চ বার্ষিক সুদের হার/ মুনাফা/ সার্ভিস চার্জ হচ্ছে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ। এর মধ্যে গ্রাহক পর্যায়ে ঋণগ্রহীতা দেবে ৪ শতাংশ এবং অবশিষ্ট সাড়ে ৫ শতাংশ সুদ ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে সরকার। সরকারের প্রদেয় সুদ ভর্তুকির মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক পাবে দশমিক ৫ শতাংশ, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাবে ১ শতাংশ ও গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ প্রদানকারী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান পাবে ৪ শতাংশ সুদ।

গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হচ্ছে দুই বছর। ছয় মাসের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৮টি মাসিক কিস্তিতে এ ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ঋণ প্রাপ্তির জন্য গ্রাহকদেরকে আবেদনপত্রের সাথে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন সনদ/পাসপোর্টের কপি; ট্রেড লাইসেন্স/সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন/পৌরসভার কাউন্সিলর/ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র এবং যেকোনো দুইজনের গ্যারান্টি দাখিল করতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (এমএফআই) তাদের বিদ্যমান ঋণ স্থিতির সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রণোদনা ঋণ তহবিলের আওতায় ঋণ নিতে পারবে। একটি ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ পাঁচটি ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিতে পারবে, তবে মোট গৃহীত ঋণ নির্ধারিত ঋণসীমার মধ্যে থাকতে হবে।

ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে তাদের মোট প্রদেয় ঋণের ৬০ শতাংশ উৎপাদন ও সেবা খাতে এবং ৪০ শতাংশ ট্রেডিং খাতে বিতরণ করতে পারবে। বিতরণকৃত ঋণের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনা পদ্ধতিতে গ্রাহক পর্যায়ে নিয়মিত মনিটরিং অব্যাহত রাখতে হবে। তবে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রাহক নির্বাচন, ঋণ বিতরণ-সংশ্লিষ্ট ব্যয়, গ্রেস পিরিয়ড, ঋণের কিস্তি, ঋণ আদায়, ঋণ শ্রেণিকরণ ও মনিটরিং ইত্যাদি বিষয় ‘এমআরএ’ ও ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হবে।

প্রণোদনা ঋণ তহবিল প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ক্ষুদ্রঋণ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রস্তাবিত নীতিমালায় বেশকিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে। এগুলো হচ্ছেÑ ঋণ তহবিলের জন্য আবেদনকারী ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ‘এমআরএ’ থেকে ঋণ প্রাপ্তির সক্ষমতা বিষয়ক প্রত্যয়নপত্র নিতে হবে; অর্থায়নকারী ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে প্রত্যয়নপত্র চাওয়ার তিন কার্যদিবসের মধ্যে এমআরএ এ-সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র সরবরাহ করবে; প্রত্যয়নপত্র প্রাপ্তির সর্বোচ্চ এক সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে; অর্থায়নের ক্ষেত্রে এমএফআই’র পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক শুধু ঋণ পরিশোধের ঘোষণাপত্র ও বিদ্যমান ঋণ স্থিতি জামানত হিসেবে রাখা যাবে; অর্থ প্রাপ্তির সাথে সাথে ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ নিশ্চিত করবে এবং এ নীতিমালার আওতায় গৃহীত ঋণ দ্বারা বিদ্যমান কোনো ঋণ সমন্বয়/পরিশোধ করা যাবে না। ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক/এমআরএ বরাবর চাহিদা মোতাবেক সময়ে সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, করোনার প্রভাব মোকাবেলায় প্রান্তিক পর্যায়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সর্বোপরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দ্রুত দারিদ্র্য নিরসনে সিএমএসএমই খাত মুখ্য ভূমিকা পালন করে। কিন্তু শুধু ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব খাতের উদ্যোক্তাদের কাক্সিক্ষত মাত্রায় আর্থিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব খাতের একটি বড় অংশ ‘মাইক্রো ফাইন্যান্স ইনস্টিটিউশন’ (এমএফআই)-এর মাধ্যমে ঋণ নিয়ে থাকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘মাইক্রো ক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি’ (এমআরএ) কর্তৃক সনদপ্রাপ্ত এমএফআই তথা ক্ষুদ্রঋণ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে সিএমএসএমই খাতে প্রণোদনা ঋণ প্রদানে পৃথক একটি নীতিমালা দরকার।

সর্বশেষ সংবাদ

হাফপ্যান্ট পরে কনসার্ট করায় গায়িকাকে আক্রমণ

ভারতীয় গায়িকা সুনিধি চৌহান। বলিউডের বহু ছবিতে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। ‘মস্ত’ ছবির ‘রুকি রুকি সি জিন্দেগি’ গানের পরই জনপ্রিয়তা...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ