সেপ্টেম্বরের মধ্যে দেশের প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ককে করোনা ভ্যাকসিনের অন্তত একটি করে ডোজ দেয়ার পরিকল্পনা করছে ব্রিটিশ সরকার। রোববার ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিনিক র্যাব এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, সরকার শিগগিরই কয়েকটি জায়গায় সার্বক্ষণিক ভ্যাকসিন দেয়া শুরু করবে। পাশাপাশি, ভ্যাকসিনেশনের গতি বাড়ানোর জন্য আরও বেশি কেন্দ্র খোলা হচ্ছে।
জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবা (এনএইচএস) শনিবার ঐতিহাসিক স্যালসবারি ক্যাথেড্রালে একটি গণ টিকা কেন্দ্র চালু করেছে। সেখানে ভ্যাকসিন নেয়ার সময় যন্ত্রসংগীত শোনার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ডমিনিক র্যাব স্কাই নিউজকে বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য সেপ্টেম্বরের মধ্যে সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি প্রথম ডোজ সরবরাহ করা। আমরা যদি আরও দ্রুত করতে পারি তবে ভালো হয়।’ ব্রিটেনের মোট জনসংখ্যা ৬ কোটি ৭৫ লাখ। তাদের মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্কের সংখ্যা ৫ কোটি ১০ লাখেরও বেশি। সরকারের এই নতুন পরিকল্পনার ফলে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার উপরে চাপ আরও বাড়বে। এ বিষয়ে এনএইচএস এর চিফ এক্সিকিউটিভ সাইমন স্টিভেনস বিবিসিকে বলেন, ‘ইতিমধ্যে হাসপাতালগুলোতে প্রতি ৩০ সেকেন্ডে একজন করে করোনা রোগি ভর্তি হচ্ছেন। এটি স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে চরম পরিস্থিতি তৈরি করছে।’ তিনি বলেন, ‘ঘটনাগুলো অত্যন্ত স্পষ্ট। হাসপাতালগুলো চরম চাপের মধ্যে রয়েছে এবং কর্মীরা চরম পরিশ্রম করছেন। ক্রিসমাস ডে’র পর থেকে ইংল্যাণ্ডের হাসপাতালগুলোতে আরও অন্তত ১৫ হাজার নতুন রোগি ভর্তি হয়েছেন।’
ব্রিটেনের স্বাস্থ্যসেবা খাত ভেঙ্গে পড়ার মুখে রয়েছে। কারণ, ঠান্ডা ও ভেজা আবহাওয়ার সাথে সাথে সংক্রমণ আরও সহজে ছড়িয়ে পড়ছে। সংক্রমণ বৃদ্ধির ফলে হাসপাতারে ভর্তি কোভিড-১৯ রোগির সংখ্যা রেকর্ড ৩৭ হাজার ৪৭৫ জনে ছাড়িয়েছে। গত এপ্রিলের করোনা মহামারীর প্রথম ধাপের থেকেও এই সংখ্যা ৭৩ শতাংম বেশি। ব্রিটেনে এখন অবধি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৮৮ হাজার ৭৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সংখ্যা ইউরোপের অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি ও বিশ্বব্যাপী পঞ্চম সর্বোচ্চ।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গত ২ জানুয়ারী ভাইরাস সংক্রমণকে কমিয়ে আনতে এবং এনএইচএসকে সুরক্ষিত করার লক্ষ্যে দেশজুড়ে তৃতীয়বারের মতো লকডাউন জারি করেছিলেন। সরকার বলেছে যে, তারা ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত লকডাউন ব্যবস্থা পর্যালোচনা করবে না, সেই সময়ের মধ্যে তারা ৭০ বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেককে কমপক্ষে এক ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করার পরিকল্পনা করেছে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের এবং বিশেষত করোনার ঝুঁকিতে থাকা অন্যান্যদেরও এই সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিন দেয়া হবে।
সূত্র: এপি।