spot_img

হাই এলার্ট আমেরিকায়, নিরাপত্তায় মাথাপিছু ১৫ পুলিশ

অবশ্যই পরুন

একেকজনের নিরাপত্তায় থাকবেন ১৫ জন অফিসার। অর্থাৎ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানে ভিড় থাকবে ন্যাশনাল গার্ড আর ক্যাপিটল পুলিশের। দুই হাজার অতিথির জন্যে ২৫ হাজার ন্যাশনাল গার্ড এবং ক্যাপিটল পুলিশ ও ডিসি মেট্রোপলিটন পুলিশ মিলিয়ে আরও ৫ হাজার অফিসার থাকবেন ২০ জানুয়ারির শপথ অনুষ্ঠানে।

শুধু তাই নয় এ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তার জন্যে ক্যাপিটল হিল, হোয়াইট হাউজসহ আশপাশের সকল এলাকায় মেটাল ও কংক্রিটের কঠিন ব্যারিকেড স্থাপন করার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। তিনদিন আগে থেকেই ক্যাপিটল হিলসহ ওয়াশিংটন ডিসির পুরো এলাকা ন্যাশনাল গার্ডের নিয়ন্ত্রণে নেয়া হয়েছে। এর ফলে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতে। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ সে এলাকায় যাচ্ছেন না।

করোনার পরিপ্রেক্ষিতে লকডাউনের সময়েও এমন ভুতুড়ে অবস্থা তৈরি হয়নি বলে সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। সবসময় এক ধরনের আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। সর্বশেষ ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত একটি সংবাদে পুরো প্রশাসনও অস্থিরতায় আক্রান্ত হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসি পুলিশের গোয়েন্দারা মনে করছেন, ট্রাম্পের চরমপন্থি সমর্থকরা ২০ জানুয়ারি আরও সশস্ত্র অবস্থায় কংগ্রেসে হামলা চালাতে পারে। ভেতরে ভেতরে সে প্রস্তুতি চলছে।

আমেরিকার ৫০টি স্টেটের রাজধানীতেও জঙ্গি হামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। এমনি অবস্থায় বাইডেনের শপথ অনুষ্ঠানের আগেই বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হোয়াইট ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তিনি চলে যাবেন ফ্লোরিডায়। অর্থাৎ শপথ অনুষ্ঠানে বড় ধরনের গোলযোগের সবুজ সংকেতের সিগন্যালের অংশ হিসেবেই তিনি হোয়াইট ছাড়বেন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, এখন পর্যন্ত জো বাইডেনের বিজয়কে তিনি মেনে নেননি। ট্রাম্পের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স অবশ্য কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং শপথসহ ক্ষমতা গ্রহণের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার সম্মতি দিয়েছেন। স্মরণ করা যেতে পারে, ৬ জানুয়ারি ট্রাম্পের লেলিয়ে দেয়া জঙ্গিদের টার্গেট ছিলেন মাইক পেন্স।

ইলেক্টরাল কলেজের ভোট সার্টিফাই করায় ট্রাম্পের ইঙ্গিতে পেন্সকে টার্গেট করা হয়েছিল বলে ঐ হামলায় গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে গণমাধ্যমে তা প্রকাশিত হয়েছে। আরো উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি ট্রাম্পের শপথ অনুষ্ঠানেও সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানদের মধ্যে দুই লাখ আমন্ত্রণ পত্র বিতরণ করা হয়। সে স্থলে এবার একেকজনকে দুটি করে ইনভাইটেশন কার্ড দেয়া হয়েছে অর্থাৎ কংগ্রেসম্যানরা মাত্র একজন করে অতিথি আনতে পারবেন। সর্বমোট ১০৭০ থাকবেন অনুষ্ঠানে। শপথ অনুষ্ঠান দেখার জন্যে ন্যাশনাল মলের সামনে লিঙ্কন মেমরিয়্যাল এবং ইউএস ক্যাপিটলের ভেতরে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটতো। এবার সে সুযোগ নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে ন্যাশনাল মল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সাধারণ জনগণের পরিবর্তে সেখানে থাকবে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা এবং যে কোন ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাধুনিক সাজ-সরঞ্জাম।

অর্থাৎ পুরো লকডাইনে চলে গেছে হোয়াইট হাউজ এবং ক্যাপিটল হিল এলাকা। অথচ করোনা সত্ত্বেও পূর্বাহ্নে ঘোষণা করা হয়েছিল যে থার্ড স্ট্রিট থেকে ১৩ স্ট্রিট পর্যন্ত ন্যাশনাল মলের পুরোটাই আমেরিকার ১৯১৫০০ পতাকায় সজ্জিত করা হবে। অর্থাৎ ‘ফিল্ড অব ফ্ল্যাগ’ হিসেবে পরিণত করে করোনার জন্যে আসতে না পারা মানুষের প্রতিনিধিত্ব করার প্রয়াস চালানো হতো। এখন সেটিও হবে না ৬ জানুয়ারির জঙ্গি হামলার কারণে। আগেই জানানো হয়েছে, করোনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মেনেই এ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টন, জর্জ বুশ এবং বারাক ওবামা থাকবেন সস্ত্রীক। জিমি কার্টার এবং তার স্ত্রী আসবেন না স্বাস্থ্যগত কারণে।

২০ জানুয়ারির পরও ক্যাপিটল হিলের নিরাপত্তায় ১০ হাজারের অধিক ন্যাশনাল গার্ড থাকবে। এর মধ্যে ৬২০০ জন ইতিমধ্যেই এসেছেন নিউইয়র্ক, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান, নিউজার্সিসহ ৬ স্টেট থেকে। করোনার পরিপ্রেক্ষিতে সীমিত আকারে যেসব অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল, সেগুলোও বাতিল করা হয়েছে। শপথ গ্রহণ ছাড়া অন্যসবকিছু ভার্চুয়ালে হবে। বাইডেন টিমের প্রযোজনায় ২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ৯০ মিনিটে ‘সিলেব্রেটিং আমেরিকা’ শীর্ষক একটি মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান সিএনএন, এবিসি, সিবিএস, এনবিসি এবং এমএসএনবিসিতে সম্প্রচার করা হবে। দীর্ঘ সময়ের এই অনুষ্ঠান তৈরী ও প্রচারের তহবিল গড়তে মাথাপিছু সর্বোচ্চ ৫ লাখ ডলার এবং কর্পোরেশন থেকে সর্বোচ্চ এক মিলিয়ন ডলার করে চাঁদা নেয়া হচ্ছে বলে বাইডেনের অভিষেক কমিটি জানিয়েছে।

করোনায় যারা মারা গেছেন তাদের স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানাতে ১৯ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় অনুষ্ঠান হবে। এরপর লিঙ্কন মেমরিয়্যালে লাইটিং করা হবে তাদের স্মরণে। একইসময়ে বাইডেনের সমর্থকদের নিজ নিজ এলাকাতেও মোমবাতি প্রজ্জ্বলনের কর্মসূচির আহবান জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ সংবাদ

চিফ অফ স্টাফ হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে নিয়োগ দিলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে জয়ের পর তার চিফ অব স্টাফ হিসেবে সুসি ওয়াইলসকে নিয়োগ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নির্বাচনে জয়ের পর...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ