যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের স্টাফরা হোয়াইট হাউস ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেকেই চলেও গেছেন। এখন যারা রয়েছেন তারা গোছগাছ করছেন। দেশটির ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু হোয়াইট হাউসে বিদায়ের প্রস্তুতি চলছে উল্লেখ করে প্রতিবেদন বলা হয়েছে, গতকাল সেখানে মালপত্রবাহী গাড়ি দেখা গেছে। হোয়াইট হাউসের প্রেসবক্স এখন পুরোপুরি শূন্য। সেখানে যে সহকারীরা বসতেন তাদের আসনগুলো খালি। শুধু রয়েছে মালপত্র বোঝাই বাক্স।
নিঃসঙ্গ ট্রাম্প অফিস ছাড়ছেন নিরানন্দ পরিবেশে। ছোট হয়ে আসছে তার চারপাশ। খুব কাছের মানুষগুলোও এখন তার পাশে নেই। সবার আতঙ্ক- আগামী ২০ জানুয়ারি দুপুরের পর কী ঠিক ঘটতে যাচ্ছে তাদের জীবনে?
এমন পরিবেশের বর্ণনা দিয়ে আজ শুক্রবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সম্প্রতি ট্রাম্পের খুব কাছের উপদেষ্টারা এক সাধারণ আলোচনায় তার সম্ভাব্য পদত্যাগের বিষয়ে কথা তুলেছিলেন। কিন্তু, ট্রাম্প তা তাৎক্ষণাৎ নাকচ করে দিয়েছেন।
ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন তথা আগামী ২০ জানুয়ারি একটি বড় বিদায় সংবর্ধনা আয়োজনের কথা ট্রাম্প তার ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন বলে প্রতিবেদন উল্লেখ করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের অফিস ছাড়ার চিত্র সব জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে। তার বাসভবন-হোয়াইট হাউসের আঙিনায় কর্মীরা ‘বাইডেন-হ্যারিস ইনাউগুরেশন’ ব্যানার ঝুলিয়েছেন। তিনতলা ভবনের ভেতর থেকেও তা দেখা যাচ্ছে।
ভবনের ভেতরে বসে ট্রাম্প দেখলেন তার দ্বিতীয় অভিশংসন। ধীরে ধীরে একা হয়ে পড়ার দৃশ্য।
ঘনিষ্ঠজনদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ট্রাম্প যখন আর প্রেসিডেন্ট থাকবেন না তখন তিনি কী ধরনের আইনি ও আর্থিক ঝামেলায় পড়তে পারেন- তাই এখন তার সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয়। আইনজীবী ও পরমার্শকরা এ বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পকে বার বার সতর্ক করছেন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এমন দুঃসময়ে রিপাবলিকান দলের হাউজ ও সিনেট সদস্যরাও তাকে ত্যাগ করেছেন বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।
সহযোগীরা ট্রাম্পকে বিদায় ভাষণ দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন, সরাসরি অথবা রেকর্ড করা। তবে এতে তিনি আগ্রহ দেখাননি এবং এ নিয়ে কোনো মন্তব্যও করেননি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের পরিবর্তে মাইক পেন্স ক্যাপিটল ভবনের প্রহরীদের ও হোয়াইট হাউসের পরিচারিকাদের বিদায় জানিয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী এ কাজ প্রেসিডেন্টের করার কথা ছিল।
প্রতিবেদন আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্পের লোকজন বাইডেনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিন সকালে সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অনেকে তাকে অনুরোধ করছেন বাইডেনের ক্ষমতাগ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকার জন্যে। আবার ঘনিষ্ঠদের অনেকে তা চাচ্ছেনও না।
প্রতিবেদন মতে, ট্রাম্প এখনও তার অফিস ছাড়ার বিষয়টি বাইডেনকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নেননি। তার কয়েকজন উপদেষ্টা তাকে রীতি অনুযায়ী তা লিখতে উৎসাহ দিচ্ছেন।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ধারণা করা হচ্ছে ক্ষমতা ছাড়ার একদিন আগে ট্রাম্পে হোয়াইট হাউস ছাড়বেন। তবে তিনি ২০ জানুয়ারি সকালে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পরিকল্পনা করছেন বলেও জানা গেছে।
ট্রাম্প সামরিক কায়দায় সমবেত সমর্থক-জনতার কাছে বিদায় নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তবে সেই সমাবেশ হোয়াইট হাউসে, না কি অ্যান্ড্রুজ ঘাঁটিতে, না কি পাম বিচ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে- কোথায় হবে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
সূত্র : সিএনএন