তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়াতে সারাদেশের মতো রাজধানীর প্রকৃতিতে কুয়াশার উপস্থিতি। বাংলা ক্যালেন্ডার অনুযায়ি পৌষের শেষ দিনের মধ্য দুপুরেও সূর্যটা ছিল নিস্তেজ। যার কারণে ঢাকার আকাশ ছিল কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন। আর এই মেঘাচ্ছন্ন আকাশটাকে নানা রঙে বর্ণিল করে তুলেছিল পুরাণ ঢাকার ঐতিহ্যবাহী-সাকরাইন উৎসব।
চোকদার, মাসদার, গরুদান, লেজলম্বা, চারভুয়াদার, পানদার, লেনঠনদার, গায়েলসহ প্রায় ২৬ ধরণের ঘুড়ির বৈচিত্র্যময় ডিজাইন ও রঙের বর্ণিলতায় মুখরিত হয়ে উঠে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরশনের ৭৫টি ওয়ার্ড। দিনভর ঘুড়ি উড়িয়ে সন্ধ্যায় আতশবাজি আর রং-বেরংয়ের ফানুস উড়িয়ে ঐতিহ্য আর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন রাজধানীর পুরাণ ঢাকার বাসিন্দারা। সেই সাথে ছিল নানা রকম মুখরোচক খাবারের আয়োজন।
এমন চিত্রকল্পই ছিল প্রায় দুইশত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের দারুণ এক উৎসব ঢাকার সাকরাইন উৎসব বা পৌষ সংক্রান্তিতে। বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে এই উৎসব।
ঐতিহ্যের অনুসন্ধানে এই উৎসবে আবাল-বৃদ্ধ-বণিতারা আনন্দ আর উদ্দীপনায় মিলেমিশে একাকার হয়ে যান। এই প্রথমবারের মতো সাকরাইন উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। কর্পোরেশনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে ‘এসো ওড়াই ঘুড়ি, ঐতিহ্য লালন করি’ স্লোগানে আয়োজিত এই উৎসব একযোগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত হয় এই উৎসব।
আয়োজনের অংশ হিসেবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের ৭৫ জন কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত আসনের ২৫ জন মহিলা কাউন্সিলরকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে ১০০টি করে ঘুড়ি সরবরাহ করা হয়। পরে কাউন্সিলররা সেসব ঘুড়ি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের জনসাধারণের মাঝে বিলি করেন, যারা কমিটি নির্ধারিত মাঠ কিংবা বাড়ির ছাদে অবস্থান নিয়ে শূন্যে ঘুড়ি ওড়ান।