spot_img

তুরস্কে বিতর্কিত ধর্মগুরুর এক হাজার ৭৫ বছরের কারাদণ্ড

অবশ্যই পরুন

তুরস্কের একটি আদালত সেদেশের এক তথাকথিত টিভি ব্যক্তিত্ব ও বিতর্কিত ধর্মীয় নেতা আদনান ওকতারকে এক হাজার ৭৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত সোমবার তুরস্কের একটি আদালত অভিযুক্ত ধর্মগুরু ওকতারের বিরুদ্ধে এ রায় দেন। তুরস্কের দৈনিক সাবাহ গত সোমবার ১১ জানুয়ারি এ খবর দেয়।

তার বিরুদ্ধে নারীদের যৌন হয়রানি, নাবালিকাদের যৌন নির্যাতন, প্রতারণা এবং রাজনৈতিক ও সামরিক গুপ্তচরভিত্তিক কাজের অভিযোগ আনা হয়।
৬৪ বছর বয়সী এই বিতর্কিত ওকতার জনসমক্ষে টেলিভিশনবিদ হিসাবে পরিচিত যিনি তাঁর অনুগামীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত একটি চ্যানেল এ-৯ টিভিতে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন। তবে ওকতার ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তারা একটি বিপজ্জনক অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন। বিভিন্ন কায়দায় ব্ল্যাকমেইল এবং অন্যান্য অপরাধ কাজের সাথে ছিল আদনান ওকতার ও তার অনুসারীরা। এই গ্রুপটি ক্রমবর্ধমান অপরাধমূলক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল। ওকতার, যাকে টিভিতে ষড়যন্ত্র তত্ত্ব এবং বিবর্তনবিরোধী বক্তব্য দিতে দেখা যেত অথচ এর আড়ালে তার বিরুদ্ধে আনীত অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালানোর গুরুতর অভিযোগ পাওয়া যায় যা একজন প্রকৃত ব্যক্তিত্বকে মানায়না।

২০০০ এর দশকে ওকতারের নাম ছিল সবার মুখে মুখে। তবে ১৯৮০ এর দশকে মনগড়া ধর্মতত্ব প্রচারের জন্য যখন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৯৯ সালে যখন তাকে ব্ল্যাকমেইলের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়, যদিও আদালত তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ পায় এবং মুক্তির আগে মনোরোগ হাসপাতালে কয়েক মাস কাটিয়েছিলেন ওকতার। ২০১১ সালে তিনি একটি বিবর্তনবিরোধী বইয়ের সিরিজ বের করে আবার আবির্ভূত হন এবং একটি টিভি স্টেশন চালু করেন।

এর আগে বিবিসি তার গ্রেপ্তারের সময় ওকতারকে ব্রিটিশ ব্রডকার্স্টিং করপোরেশনের বিরুদ্ধে তার পরিচালিত ওয়েবসাইটে প্রচারণার অভিযাগ তোলে। বিবিসি আরও জানায়, তিনি তার নিজস্ব টেলিভিশন চ্যানেল পরিচালনা করেন, যার মাধ্যমে তিনি তাঁর নিজ মনগড়া ধর্মীয় উপদেশ প্রচার করতেন। মিঃ ওকতার ও তার অনুসারীদের গ্রেফতারের পিছনে ছিল তুরস্কের আর্থিক অপরাধ বিষয়ক পুলিশ। ফৌজদারী সংগঠন পরিচালনা, কর ফাঁকির অপরাধ, যৌন নির্যাতন এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আইন সহ নানা অভিযোগে তাকে ও সহযোগীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তার সমালোচকরা ওকতারকে ধর্ম প্রচারককে ইসলামের অপপ্রচার চালানোর জন্য অভিযুক্ত করেন। তিনি বিবর্তন তত্ত্বের তীব্র বিরোধী এবং “অ্যাটলাস অফ ক্রিয়েশন” নামে একটি বই লিখেছেন।

জালিয়াতি ও অপব্যবহারের অভিযোগে তুরস্কের এই টিভি প্রচারক আদনান ওকতারকে ২০১৮ সালের ১১ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি একবার বিবিসির সমালোচনা করার জন্য উৎসর্গীকৃত একটি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটও তৈরি করেছিলেন, যা তিনি বলেছিলেন যে “সাধারণত ডারউইন ব্রিটিশ ছিলেন বলেই সংবাদ সংস্থাটি আবেগের সাথে মিল রেখে কাজ করে”।

বিবিসি জানায়, গ্রেফতারের আগে তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন যে তাঁর বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলি “মিথ্যা” এবং “ব্রিটিশ আভ্যন্তরীণ রাষ্ট্রের একটি খেলা”, তিনি অতীতে প্রায়শই এই বিষয়টির কথা বলেছেন।

তিনি কামহুরিয়াত পত্রিকাকে বলেছেন যে “ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা” এই অপারেশনটির অনুরোধ করেছিল। তিনি বলেন, “ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা দীর্ঘদিন থেকেই আমাদের উপর একটি অভিযান চেয়েছিল। এই বিষয়ে তুরস্কে একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করা হয়েছিল। যুক্তরাজ্য সফরকালে (রাষ্ট্রপতি রেসেপ তাইয়েপ এরদোগান )কে এই অনুরোধ জানানো হয়েছিল,” ওকতার অভিযোগ করেন।

তাঁর এ-৯ টেলিভিশনের সম্প্রচারগুলি ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেনা। তাঁর সম্প্রচারগুলি ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে প্রচারের কথা বলা হলেও এগুলিতে ইসলামী কায়দা কানুন বহির্ভুত নতর্কী, খোলামেলা পোশাকে বসা যুবতীদের দেখা যেত। তুরস্কের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিভাগের প্রধানকে বলতে শোনা যায়, ওকতার সম্ভবত “তার মানসিক ভারসাম্য হারাতে পারেন”। তুরস্কের সম্প্রচার নিয়ন্ত্রক তার টেলিভিশনের পাঁচ-পর্বের সিরিজের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে এবং ঐ চ্যানেলটি বন্ধ করে দেয়। সূত্র : বিবিসি

 

সর্বশেষ সংবাদ

কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়: আইজিপি

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ