ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সব সময়ই শক্তিশালী। ভারত থেকে শুরু করে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর সেটা জানা হয়ে গেছে। তবে জিম্বাবুয়ের পর কোনো দল যদি এটা ভালো করে বুঝে থাকে, সেই দলটির নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
২০১২ সাল থেকে ঘরের মাঠের বাংলাদেশকে চিনে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৯ বছর আগে সেই ওয়ানডে সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে হারে ক্যারিবীয়রা। সর্বশেষ ২০১৮ সালে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েও টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ হেরে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
যদিও ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে বাংলাদেশের প্রতাপ দেখানোর বিষয়টি আর ঘরের মাঠে সীমাবদ্ধ নেই। সর্বশেষ পাঁচ ওয়ানডেতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ, এর মধ্যে চারটি জয় নিরপেক্ষ ভেন্যুতে। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতেও ওয়ানডে সিরিজ জিতে এসেছে বাংলাদেশ।
গত কয়েক বছরে পূর্ণ শক্তির দল নিয়েও ঘরের মাঠ, বাংলাদেশসহ অন্যান্য ভেন্যুতে সুবিধা করতে পারেনি ক্যারিবীয়রা। সেখানে নিয়মিত দলের ১৩ জন ক্রিকেটারকে ছাড়াই এবার বাংলাদেশে এসেছে তারা। এ কারণেই ক্যারিবীয়দের শুনতে হচ্ছে, এবারের মিশনটা কতোটা কঠিন হবে কিংবা বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে ফেবারিট কিনা?
এমন প্রশ্নে বাংলাদেশকে ফেবারিট মেনে নিতে একটুও ভাবতে হয়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচ ফিল সিমন্সকে। মঙ্গলবার ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যারিবীয় এই কোচ বলেন, ‘বাংলাদেশ স্পষ্টভাবে ফেভারিট। কারণ তারা ঘরের মাঠে ভালো খেলে। আমরা এটা নিয়ে তর্ক করতে পারি না।’
দলে নেই জেসন হোল্ডার, কাইরন পোলার্ড, ড্যারেন ব্রাভো, শামার ব্রুকস, রস্টন চেস, শেলডন কটরেল, এভিন লুইস, শেই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরানদের মতো ক্রিকেটাররা। যে কারণে বাংলাদেশকে ফেবারিট মানতেই হচ্ছে সিমন্সকে। এরপরও অবশ্য জয়ের আশা ছাড়ছেন না তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ কোচ বলছেন, ‘আমরা ওয়ানডে সিরিজ জয়ের উদ্দেশ্যেই ক্যারিবিয়ান ছেড়েছি। আপনারা হয়তো বলছেন আমাদের পুরো দল নেই কিন্তু আমাদের এমন একটি দল আছে, যারা এই কন্ডিশনে জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত।’
‘যেকোনো সিরিজ খেলার আগে উদ্দেশ্য থাকে সিরিজ জয়ের। প্রতিটি দল তাদের ঘরের মাঠে ভালো খেলে। সেদিক থেকে কাজটা সহজ হবে না। তবে আমাদের প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে সিরিজ জয় করা। দ্বিতীয়ত, আমাদের ক্রিকেটারদের প্রস্তুত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আমরা যদি ভালো প্রস্তুতি নিই, তাহলে ঢাকা ও চট্টগ্রামে ভালো করার সুযোগ থাকবে।’ যোগ করেন তিনি।
নিয়মিত ক্রিকেটাররা না থাকলে দলের অন্যদের অনুপ্রাণিত করার কাজটি সাধারণত কঠিন হয়ে পড়ে। যদিও ক্যারিবিয়ান কোচ এটাকে কঠিন করে দেখছেন না, ‘এই ছেলেদের অনুপ্রাণিত করা কঠিন নয়। এখানে যারা আছে, তাদের সবাই সাফল্যের জন্য ক্ষুধার্ত। তারা দলে জায়গা পোক্ত করতে চায়। আগেও বলেছি, সামনে আমাদের অনেক খেলা আছে এ বছর। সবাই সেদিক থেকে বেশ অনুপ্রাণিত।’
তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্ট খেলতে গত ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগামী ২০ ও ২২ জানুয়ারি মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম দুই ওয়ানডে খেলবে বাংলাদেশ-উইন্ডিজ। ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে দুই দল। ৩ ফেব্রুয়ারি একই ভেন্যুতে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি মিরপুর স্টেডিয়ামে শুরু হবে ১১ ফেব্রুয়ারি।