মোদি সরকারের নতুন তিন কৃষি আইনে আবারও স্থগিতাদেশ দিয়েছেন ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আইনগুলো কার্যকর করা যাবে না। সরকার পক্ষ এবং আন্দোলনকারী কৃষকদের মধ্যে বোঝাপড়ায় একটি বিশেষ কমিটি করারও নির্দেশ দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে এ পর্যন্ত অন্তত আট দফা বৈঠক হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। তাতে কোনো সমাধান আসেনি। কৃষকদের মতামত নিয়ে সরকার পক্ষ আইন সংশোধনের প্রস্তাব দিলেও তাতে রাজি হননি আন্দোলনকারীরা। তারা বিতর্কিত আইন বাতিলের দাবিতে অনড়। এ কারণে দুই পক্ষের সমঝোতায় একটি কমিটি করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তবে সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ও গ্রহণ করতে রাজি নয় ভারতের কৃষক সংগঠনগুলো। তারা কোনো আলোচনা নয়, বরং একবারেই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। আন্দোলনকারী পক্ষের আইনজীবী আদালতে বিষয়টি জানালে ভারতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে, এএস বোপান্না এবং ভি রামসুব্রহ্মণ্যমের ডিভিশন বেঞ্চ বলেন, ‘এটা রাজনীতি নয়। রাজনীতি এবং বিচার ব্যবস্থার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। এখানে সবার সহযোগিতা দরকার।’
বিচারকরা বলেন, ‘আইনগুলোর বৈধতা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। টানা আন্দোলনের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা ও সম্পত্তির ওপর যে প্রভাব পড়েছে, সেটাও উদ্বেগজনক। আমরা যতটা সম্ভব সুষ্ঠুভাবে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।’
তারা বলেন, ‘ক্ষমতাবলে আমরা আইন স্থগিত করতে পারি। তবে সেটা অনির্দিষ্টকাল স্থগিত রাখা যায় না। কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত একটি বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া, এর মাধ্যমে বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। যারা সত্যিকারে সমাধান চান, তারা এই কমিটির কাছে যাবেন। কমিটি কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না, কোনো শাস্তিও দেবে না। তারা শুধু আমাদের কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।’
এসময় কৃষক পক্ষের আইনজীবী এমএল শর্মা জানান, আন্দোলনকারীরা কোনো কমিটির সঙ্গে কথা বলতে চান না। এক্ষেত্রে তার যুক্তি, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একবারও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন মনে করেননি। এ কারণে কোনো কমিটির সঙ্গে বসতে রাজি নন আন্দোলনকারীরা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। কারণ, তিনি এই মামলার কোনো পক্ষ নন।’
দিল্লি সীমান্তে কৃষকদের আন্দোলনে খালিস্তানপন্থী গোষ্ঠীর মদদ রয়েছে বলে দাবি করেছে শাসক গোষ্ঠী। কৃষি আইনগুলোর সমর্থনে আদালতে পিটিশন জমা দেয়া পিএস নরসিংহও একই দাবি তোলেন। এতে সম্মতি দিয়েছেন ভারতীয় অ্যাটর্নি জেনারেল কেকে বেণুগোপালও।
এ বিষয়ে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত জানতে চান, কীসের ভিত্তিতে সরকার পক্ষ এমন দাবি করছে? এ বিষয়ে আগামী বুধবারের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে।