আচমকা আন্তর্জাতিক সব সংস্করণ থেকে অবসর নিয়েছেন মোহাম্মদ আমির। অবসর নেওয়ার পেছনে অনেকগুলো কারণ জানিয়েছেন পাকিস্তানের বাঁহাতি এই পেসার। তবে যেসব কারণ উল্লেখ করে অবসরে গেছেন আমির, সেসব কথার কোনো সত্যতা নেই বলে জানিয়েছেন পাকিস্তান দলের প্রধান নির্বাচক ও কোচ মিসবাহ-উল-হক। ছোট ছোট ঘটনাকে আমির বড় করে উপস্থাপন করেছেন বলে জানিয়েছেন মিসবাহ।
সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের সফর দীর্ঘ করতে ২০১৯ সালের জুলাইয়ে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় জানান আমির। গত মাসে বিদায় বলে দেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব সংস্করণকে। কারণ হিসেবে আমির মানসিক অত্যাচার, প্রচন্ড চাপ ও দলে বিরুদ্ধ পরিবেশের কথা উল্লেখ করেন। এসবের পেছনে বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিসের হাত ছিল বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
মিসবাহ অবশ্য আমিরের দাবি আমলেই নেননি। এসব দাবি পাকিস্তান কোচের কাছে স্রেফ মিথ্যাচার। লাহোরে এক সংবাদ সম্মেলনে মিসবাহ বলেন, ‘পারফরম্যান্সের কারণে তাকে কেউই নিতে দলে চায়নি। কেন সে এত কিছু তৈরি করছে এবং তিলকে তাল বানিয়েছে, আমি বুঝতে পারছি না। সে দলে জায়গা পায়নি, এর পরের প্রক্রিয়া খুব সাধারণ ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের ফর্ম দেখিয়ে জাতীয় দলে জায়গা আদায় করে নেওয়া তার কাজ ছিল। এর বাইরে সবকিছু অবান্তর।’
ওয়াকার ইউনিসকে নিয়ে আমিরের অভিযোগ প্রসঙ্গে মিসবাহ বলেন, ‘কথা উঠেছে, আমিরের ঘটনায় ওয়াকারের হাত আছে। কিন্তু এর কোনো সত্যতা নেই। ৬ জন নির্বাচক ছিলেন, সঙ্গে আমি প্রধান নির্বাচক। এ ছাড়া অধিনায়কও ছিল। কেবল একজন দল নির্বাচনে প্রভাব রেখেছে, এটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর পাকিস্তান দলে জায়গা পাওয়া নিয়ে অনেক বাধার মুখে পড়তে হয় আমিরকে। তাকে দলে নেওয়ার প্রতিবাদে ক্যাম্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন মোহাম্মদ হাফিজ, আজহার আলীরা। সে সময় পাকিস্তান দলের কোচ ছিলেন ওয়াকার ইউনিস এবং মিসাবহ ছিলেন অধিনায়ক।
শত বাধার পরও আমিরকে দলে নেওয়ার সেই ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে মিসবাহ বলেন, ‘আমিরের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে এবং আমি সবসময়ই ক্রিকেটারদের ভাবনাকে সম্মান করি। হোক সে সিনিয়র কিংবা জুনিয়র। আমির যখন ফিরে এলো, আমি ছিলাম অধিনায়ক। তখন তাকে দলে স্বাগত জানিয়েছি, সবকিছু একপাশ করে শুধু পাকিস্তান ক্রিকেটের স্বার্থে তাকে সমর্থন দিয়েছি।’
নিউজিল্যান্ড সফরে পাকিস্তান দলে জায়গা হয়নি আমিরের। এরপরই অবসরের ঘোষণা দেন তিনি। এ সময়ে আমিরের তার ফর্ম ও পারফরম্যান্সে দিকে নজর দেওয়া উচিত ছিল বলে মনে করেন পাকিস্তানের কোচ।
এ নিয়ে মিসবাহ বলেন, ‘শাহিন আফ্রিদি, হাসনাইন, হারিস রউফের মতো বোলাররা নিজেদের উজাড় করে দিচ্ছে, প্রতিনয়ত উন্নতি করছে এবং আমিরের চেয়ে ভালো করছে। আমিরের উচিত ছিল এদের সঙ্গে লড়াই করে দলে জায়গা করে নেওয়া। শুধু সিনিয়র বোলার বলেই কাউকে দলে নেওয়া যাবে না, ফর্মও দেখাতে হবে।’