প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানকে শেষ শ্রদ্ধা জানালেন তার সহকর্মীরা। জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে তাঁর মরদেহ আনা হয় কারওয়ান বাজারে দীর্ঘদিনের কর্মস্থল প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে। সেখানে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ সহকর্মীরা এই বরেণ্য সাংবাদিকের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।
দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিজানুর রহমান খানের মরদেহ আনা হয় প্রথম আলো কার্যালয়ে। সেখানে আগে থেকে প্রথম আলোর বর্তমান, সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও নানা পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মরদেহ পৌঁছালে এক শোকাবহ পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সহকর্মীদের অনেকেই এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মরদেহ বেলা একটার দিকে মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। বাদ জোহর সেখানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হবে।
এর আগে আজ সকাল ১০টার দিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে জানাজায় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, আইনজীবী ও সাংবাদিকেরা অংশ নেন। জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান খানের দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার জানাজায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির বর্তমান ও সাবেক নেতারা অংশ নেন। এ ছাড়া ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকেরা জানাজায় অংশ নেন। সেখানেও জানাজা শেষে মিজানুর রহমান খানের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
সোমবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিজানুর রহমান খান মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর। তিনি মা, স্ত্রী, তিন সন্তান, পাঁচ ভাই, তিন বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
মিজানুর রহমান খান করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাঁর নমুনা পরীক্ষায় গত ২ ডিসেম্বর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তিনি ৫ ডিসেম্বর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে ভর্তি হন। তাঁর শারীরিক সমস্যা বাড়লে সেখান থেকে ১০ ডিসেম্বর তাঁকে মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসক।