ভারত থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি করবে সরকার। এতে ব্যয় হবে ১০৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত সময়ের জন্য এসব ডিজেল আমদানি করা হবে।
জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে সরকার টু সরকার (জিটুজি) ভিত্তিতে ও আন্তর্জাতিক কোটেশন (টেন্ডার) প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকে।
২০২১ সালের পরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রস্তাব অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বরের সভায় অনুমোদিত হয়েছে।
সূত্র জানায়, ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান নুমালীগড় রিফাইনারি লিমিটেডের (এনআরএল) শিলিগুড়ি মার্কেটিং টার্মিনাল থেকে ইন্দোবাংলা ফ্রেন্ডশিপ পাইপ লাইনের মাধ্যমে বাংলাদেশের পার্বতীপুর ডিপোতে ডিজেল আমদানির বিষয়ে গত ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল বিপিসি ও এনআরএলের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়।
পাইপ লাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল আমদানির লক্ষ্যে বিপিসি ও এনআরএলের মধ্যে ১৫ বছরের জন্য ফিক্সড প্রিমিয়ামে (৫.৫০/বিবিএল) সেলস অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট গত ২২/১০/২০১৭ তারিখে স্বাক্ষরিত হয়। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান বাণিজ্যিক সুসম্পর্কের বিষয় বিবেচনা করে পাইপ লাইন নির্মাণের আগে অন্তর্বর্তীকালে এনআরএল থেকে রেল ওয়াগনের মাধ্যমে ২০১৬ সাল থেকে ডিজেল আমদানি করা হয়েছে।
২০২০ সালে অনুমোদিত ৬০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেলের মধ্য থেকে ডিসেম্বর, ২০২০ সময় পর্যন্ত ১৩টি পার্সেলে প্রায় ২৮ হাজার ৮৮৩ মেট্রিক টন ডিজেল আমদানি সম্পন্ন হবে। উক্ত অনুমোদিত পরিমাণের অবশিষ্ট পরিমাণ ডিজেল ২০২১ সালে সরবরাহ করার বিষয়ে এনআরএল সম্মতি জানিয়েছে। এনআরএল আগের মতো রেল ওয়াগনে ডিজেল সরবরাহ চলমান রাখার বিষয়ে আগ্রহের কথা জানায়। বিদেশ থেকে আমদানি করা জ্বালানি তেল চট্টগ্রামের প্রধান স্থাপনায় গ্রহণ/সংরক্ষণের পর দৌলতপুর ডিপো হয়ে পার্বতীপুর ডিপোতে পাঠাতে হয়। ফলে পরিবহন খরচ ও অপারেশন লস (ট্রানজিট লস) অনেক বেশি হয়।
সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তীকালে এনআরএল থেকে পার্বতীপুরে ডিজেল গ্রহণ করা হলে অল্প সময়ের মধ্যে ডিজেল পাওয়া যাবে ও পরিবহন খরচ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি অপারেশনাল লসও কমবে। এছাড়া, বাংলাদেশ রেলওয়ের ওয়াগন স্বল্পতার কারণে প্রধান স্থাপনা, চট্টগ্রাম/দৌলতপুর ডিপো থেকে পার্বতীপুর ডিপো অঞ্চলের চাহিদা অনুযায়ী ডিজেল সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। ফলে, এনআরএল থেকে আমদানি করা ডিজেল দিয়ে পার্বতীপুর ডিপো অঞ্চলের চাহিদা পূরণসহ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে ডিজেল সরবরাহ নিশ্চিত করা সহজ হবে।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জানুয়ারি-জুন সময়ের জন্য ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল আমদানিতে প্রিমিয়াম, রেফারেন্স মূল্য ও ইনস্যুরেন্সসহ আনুমানিক মিলিয়ন ১২.৬৮০ মার্কিন ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৭ কোটি ৭২ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে আমদানিতব্য ডিজেলের প্রকৃত মূল্য হবে বিল অব লেডিং (বিএল) তারিখে প্রকাশিত প্ল্যাটস ভিত্তি ধরে ২ দিন আগে এবং ২ দিন পরে অর্থাৎ ৫ দিনের গড় মূল্য। বিএল তারিখে ফ্ল্যাটস প্রকাশিত না হলে সে ক্ষেত্রে বিএল তারিখের আগের ৩ দিন ও পরের ২ দিন অর্থাৎ দিনের গড় হিসেবে জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য মিন অব প্ল্যাটস আরব গালফ (এমওপিএজি) অনুযায়ী নির্ধারিত হবে। বিএল তারিখে আন্তর্জাতিক বাজারে ডিজেলের দাম এবং ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য মানে কম/বেশির ফলে ডিজেল আমদানির দামও কম/বেশি হতে পারে।