ভারত থেকে সব দেশেই করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন এশিয়া অঞ্চলে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী (সিইও) আদর পুনাওয়ালা।
সম্প্রতি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন রফতানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার খবর নিয়ে উদ্বেগ তৈরির প্রেক্ষাপটে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) এক টুইট বার্তায় তিনি এ তথ্য জানান।
টুইটে আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে তাই আমি দুটি বিষয় পরিষ্কার করতে চাই; সব দেশেই ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেয়া আছে এবং সম্প্রতি ভারত বায়োটেক সম্পর্কে যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে একটি যৌথ বিবৃতি দেয়া হবে।’
গত ৫ নভেম্বর অক্সফোর্ড উৎপাদিত ‘কোভিডশিল্ড’ ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ পেতে সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছিল বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে আগামী ছয় মাসে মোট তিন কোটি ডোজ পাবে বাংলাদেশ। এর মূল্য হিসাবে গত রোববার অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা পাঠিয়ে দেয়ার কথাও জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
কিন্তু এর মধ্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউটকে আগামী কয়েক মাসের জন্য করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনের রফতানি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। এই নিষেধাজ্ঞার ফলে দরিদ্র দেশগুলোকে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজের জন্য আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হতে পারে।
এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বাংলাদেশ সরকার ঢাকায় দিল্লির হাইকমিশন এবং দিল্লিতে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে।
এ বিষয়ে সোমবার (৪ জানুয়ারি) স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভ্যাকসিনের বিষয়ে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের জিটুজি (সরকারের সঙ্গে সরকারের) চুক্তি থাকায় যথাসময়ে ভ্যাকসিন পেতে কোনো সমস্যা হবে না।
তিনি আরও বলেন, ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করা হয়েছে।
এদিকে ভারতের কাছ থেকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরবরাহ নিয়ে যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে তা উড়িয়ে দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ভারত থেকে যথাসময়েই ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ।
সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ এবং ভারত একই সময়ে ভ্যাকসিন পাবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে এ সিদ্ধান্ত হওয়ায় এ বিষয়ে বাংলাদেশের চিন্তার কোনো কারণ নেই।