শীত বাড়ার সাথে সাথে ভারতে দেখা দিয়েছে বার্ড ফ্লুর আতঙ্ক। এরই মধ্যে দেশটির মধ্য প্রদেশ, রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশে বার্ড ফ্লুর সন্ধান পাওয়া গেছে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হয়েছে কেরালায় দুই জেলা।
ভারতের গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘ কেরালার আলাপুঝা ও কোয়াট্টাম জেলায় ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে ব্যাপকভাবে হাঁস মরার খবর পাওয়া যায়। সেই সময় ওই মরা হাঁস ভোপালে এইচ৫এন৮ পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়। ৮টি নমুনার মধ্যে ৫টিতে বার্ড ফ্লু ধরা পড়ে।’
কেরালার নেনদুরের একটি হাঁসের খামারে প্রায় ১ হাজার ৫০০ হাঁসের মৃত্যু হয়। কুট্টানন্দ এলাকার হাঁসের খামারেও বার্ড ফ্লু ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত এই ঘটনায় প্রায় ১২ হাজার হাঁসের মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় আরও ৩৬ হাজার হাঁস মারা হতে পারে বলে কেরালা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, যাদের গৃহপালিত পশু মারা হচ্ছে, তাদের ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার।
কিছুদিন আগে রাজস্থান ও মধ্য প্রদেশে কাকের মড়ক দেখা দিয়েছিল। সেখানেও পরীক্ষা করে দেখা যায়, বার্ড ফ্লু-তে আক্রান্ত হয়ে কাকের মৃত্যু হচ্ছে। রাজস্থান ও মধ্য প্রদেশ মিলিয়ে প্রায় ৩০০ কাকের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। এই দুই রাজ্যের রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সেখানে বার্ড ফ্লু আক্রান্ত এলাকা চিহ্নিত করতে কাজ করছে প্রশাসন।
হিমাচল প্রদেশেও পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাচ্ছে। সেখানকার পরিযায়ী পাখির মধ্যে বার্ড ফ্লু-র সংক্রমণ দেখা দিয়েছে, যার ফলে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ৭০০ পরিযায়ী পাখির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিযায়ী পাখিদের মৃত্যু বার্ড ফ্লু-তেই হয়েছে, সেটা নিশ্চিত করেছে প্রশাসন।
প্রদেশটির বন দফতর সংরক্ষণ বিভাগের প্রধান অর্চনা শর্মা গণমাধ্যমকে জানান, বরেলির ভারতীয় পশুপালন গবেষণা কেন্দ্রের পরীক্ষায় দেখা গেছে, বার্ড ফ্লু-রয়েছে এই পরিযায়ী পাখিদের শরীরে। যদিও একেবারে নিশ্চিত হতে ভোপালে প্রধান পরীক্ষা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকেও অবহিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে হিমাচলের কাংড়া জেলায় সংক্রমণ এড়াতে ইতোমধ্যেই মুরগি, মাছ, মুরগির ডিম বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাজ্য সরকার। জেলার চারটি সাবডিভিশনে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশটির চারটি রাজ্যে বার্ড ফ্লু’র সংক্রমণ সীমাবদ্ধ থাকলেও সেটা যে আরও ছড়িয়ে পড়বে না তার কোনো নিশ্চয়তা না থাকায় রীতিমতো চিন্তিত হয়ে পড়েছে দেশটির সরকার।