নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পর্বটি ভালো যায়নি সাকিব আল হাসানের। জেমকন খুলনার হয়ে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে কঠিন সময়ই পার করতে হয়েছে বাঁহাতি এই অলরাউন্ডারের। দীর্ঘ বিরতির পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও কাজটি যে সহজ হবে না, সেটা জানা হয়ে গেছে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের। তবে পুরনো ছন্দে ফিরতে সব ধরনের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ক্রিকেটে ফিরে খারাপ সময় যাচ্ছিল, এর পর আবার শশুরের অসুস্থতার খবর আসে। জেমকন খুলনার দুটি ম্যাচ বাকি থাকতেই গত ১৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে যান সাকিব। অবশ্য শশুরের সঙ্গে দেখা হয়নি তার। সাকিব বিমানে থাকা অবস্থাতেই মারা যান তার শশুর। এরপর পরিবারের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন সময় কাটিয়ে দেশে ফিরলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।
আগামী ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। এদিন থেকেই অনুশীলন শুরু করবে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে নিজেকে প্রস্তুত করতে আগেভাগেই দেশে ফিরলেন সাকিব। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে যাওয়া খারাপ সময় উতরে চেনা ছন্দে ফেরাটাই এখন তার একমাত্র লক্ষ্য। দেশে ফিরে সেই লক্ষ্যের কথা সংবাদমাধ্যমকে জানালেন সাকিব।
বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে জেমকন খুলনার হয়ে ৯টি ম্যাচ খেলেন সাকিব। ৯ ম্যাচের একটিতেও ব্যাটকে নিজের মতো করে কথা বলা পারেননি তিনি। ৯ ম্যাচে মাত্র ১২.২২ গড়ে ১১০ রান করেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। বল হাতেও ছিলেন অনুজ্জ্বল। কম খরুচে থাকলেও সাকিবের শিকার ছিল মাত্র ৬ উইকেট।
এমন পারফরম্যান্সের পর প্রশ্ন উঠেছিল, কোথায় হারালেন সেই সাকিব! এক বছর ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত থাকার কারণেই এমন হচ্ছে, এটা জানার পরও সাকিব বলেই তার থেকে সেরা পারফরম্যান্সের আশায় ছিল ক্রিকেটভক্তরা। অতীত রেকর্ড বলে, সাকিব মানেই পারফরম্যান্স। হোক সেটা বল হাতে কিংবা ব্যাট হাতে। কঠিন সময়েও দলকে পথ দেখিয়ে জয়ের পথে নিয়ে গেছেন তিনি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিবের প্রথম লড়াইটা তাই নিজেকে ফিরে পাওয়া। তবে কাজটা যে সহজ হবে না, সেটা তিনিই মনে করিয়ে দিলেন, ‘অবশ্যই একটা প্রত্যাশা থাকে। নিজের প্রত্যাশা আছে, অন্যদেরও আছে। চেষ্টা করব যেন আগের জায়গাতে ফিরতে পারি। তবে সবই বোঝা যাবে খেলা শুরু হলে। ব্যাপারটা অবশ্যই সহজ হবে না আমার জন্য। তবে আমি নিজের জায়গা থেকে অবশ্যই চেষ্টা করব।’
নিজেকে নিয়ে সংশয় আছে সাকিবের। এ কারণেই আগের জায়গায় ফেরা সহজ হবে না বলে মনে করছেন তিনি। তবে নিয়মিত দলের ১২ জন ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে দুটি দল পাঠাচ্ছে, তাদের বিপক্ষে দল হিসেবে বাংলাদেশের দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার।
এই দলের বিপক্ষে ভালো করতে না পারলে সেটা হতাশাজনক হবে বলে জানালেন সাকিব। বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের ভাষায়, ‘যে দুটি দল দিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আমার কাছে মনে হয় আমরা যদি ভালো করতে না পারি, আমাদের জন্য হতাশাজনক হবে। সে জায়গা থেকে আমি আশাবাদী যে আমাদের ভালো করা উচিত।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরছে গত মার্চে সর্বশেষ সিরিজ খেলা বাংলাদেশ। করোনাকালে বাংলাদেশ সফরে আসছে বলে ক্যারিবীয়দের ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমি খুশি যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল আসছে। তাদেরকে ধন্যবাদ জানাতে হয়, তাদের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করতে পারছে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে আমি রোমাঞ্চিত।’
বছরের শেষটা ভালো যায়নি সাকিবের। ক্রিকেটে ফিরে টানা ৯ ম্যাচে অনুজ্জ্বল থেকে গেছেন তিনি। হারাতে হয়েছে শশুরকে। তবে নতুন বছরের শুরুতেই সুখবর জানিয়েছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। তৃতীয় সন্তানের বাবা হতে যাচ্ছেন তিনি। অনাগত সন্তানের জন্য দোয়া চেয়ে সাকিব বলেন, ‘আমি চাই আল্লাহর রহমতে সবার দোয়ায় যেন সুস্থভাবে বাচ্চা পৃথিবীতে আসতে পারে। সুস্থ সবলভাবে যেন বাচ্চা ও মা দুজনেই থাকতে পারে।’