গণভোটে রায়ের সাড়ে তিন বছর পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে ঘটনাবহুল ব্রেক্সিট কার্যকর হলো। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ১১টায় (বাংলাদেশ সময় শনিবার ভোর ৫টা) ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছেদ ঘটল।
তবে এখনই পুরোপুরি এ বিচ্ছেদ কার্যকর হচ্ছে না। আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রেক্সিট হলেও এর কার্যকরের মেয়াদ ধরা হয়েছে চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত।
এ সময়ের মধ্যে ঠিক করা হবে, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইইউ’র সম্পর্ক কেমন হবে। ফলে আগামী ১১ মাস ব্রেক্সিটের জন্য পরিবর্তনকালীন সময় বা ট্রানজিশনাল পিরিয়ড হিসেবে বিবেচিত হবে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, বুধবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে ৫২১-৭৩ ভোটে দ্রুতই চুক্তিটি অনুমোদন পায়। পরে উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসে অনুমোদিত হওয়ার পর ব্রিটিশ রানির সম্মতির মধ্য দিয়ে আইনটি কার্যকর হয়।
কয়েক মাসের দর-কষাকষির পর বড়দিনের আগের দিন ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য চুক্তিতে একমত হয় যুক্তরাজ্য ও ইইউ।
এরপর, ২৮ ডিসেম্বর এই চুক্তি সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদন করেন ইইউ’র ২৭টি সদস্যদেশের রাষ্ট্রদূতেরা। পরে ইইউ’র শীর্ষ কর্মকর্তারা চুক্তিটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সই করে। সর্বশেষ ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সেটি অনুমোদন করল।
ব্রেক্সিটের ফলে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে সদস্যপদ হারালেন যুক্তরাষ্ট্রের এমপিরা। যুক্তরাজ্য থেকে ৭৩ জন সদস্য ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টে।
এখন থেকে বিশেষ আমন্ত্রণ ছাড়া ইইউ’র কাউন্সিল সামিটেও অংশ নিতে পারবেন না ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ব্রিটিশ মন্ত্রীরাও ইইউ’র কোনো বৈঠকে অংশ নিতে পারবেন না।
ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ায় ব্রিটিশ পাসপোর্টেও আসছে পরিবর্তন। ৩০ বছর পর নীল রঙের পাসপোর্ট আবার ফিরে পাবে দেশটি। ১৯২১ সালে প্রথম এ পাসপোর্টের ব্যবহার শুরু হয়েছিল তবে বর্তমান পাসপোর্টটিও বৈধ থাকবে।
ইইউ’র সদস্য থাকায় পণ্য ও বিক্রিতে আলাদাভাবে কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ ছিল না। এখন থেকে বিশ্বের যে কোনো দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক আলোচনা চালাতে পারবে যুক্তরাজ্য। তবে নতুন কোনো চার্জ আরোপ ছাড়াই যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইইউ’র বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে।