করোনাভাইরাস আবারও কানাডাবাসীকে আতঙ্কের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। গত বছরের মার্চ মাসে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ব্রিটিশ কলম্বিয়াতে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত ২৩ হাজারেরও বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এ নিয়ে মানুষের মধ্যে রয়েছে অদৃশ্য এক আতঙ্ক। এবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে করোনার নতুন ধরন, যা ঠেকাতে সরকারকে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। নতুন করে সংক্রমণ ঠেকাতে ইতোমধ্যে দেশটির অন্টারিওতে ‘স্টে হোম অর্ডার’ জারি করা হয়েছে। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি সিটিতে লকডাউন চলছে।
কানাডার প্রধান চারটি প্রদেশ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া, অন্টারিও, মন্টিয়ল এবং আলবার্টায় করোনার নতুন ধরন আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। দেশটিতে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। করোনার কারণে গত বছর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার সীমান্ত বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি কিছু সেবা চালু রয়েছে।
কানাডা সরকার দেশটির নাগরিকদের স্বাস্থ্যসুরক্ষায় ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে আরও শক্তিশালী করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। তাছাড়া নাগরিকরা যেন দ্রুত টিকার আওতায় আসতে পারে সেজন্যও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে।
সদ্য টিকাপ্রাপ্ত কানাডার নাগরিক ওমর হায়াৎ সাইফুদ্দিন বাবু বলেন, করোনা মহামারির শুরু থেকেই কানাডা সরকারের নেওয়া প্রতিটি পদক্ষেপই প্রশংসার দাবি রাখে। স্বাস্থ্যবিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অর্থনৈতিক দিকেও সমতা রাখতে কানাডা সরকারের নেওয়া প্রতিটি উদ্যোগ অন্য দেশের জন্য নিঃসন্দেহে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
কানাডার অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড মন্তব্য করেছেন, করোনা দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে নজিরবিহীন চাপে ফেলে দিয়েছে। কানাডিয়ানদের জরুরিভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। আর এ সহায়তার অংশ হিসেবে নগদ অর্থের সংকটে থাকা প্রদেশ, অঞ্চল ও মিউনিসিপ্যালিটিগুলোর স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয়ের জন্য ৭২০ কোটি ডলার সংস্থানের উদ্দেশ্যে একটি বিল এনেছে লিবারেল সরকার। এর মধ্য থেকে হেলথ ট্রান্সফারের মাধ্যমে ৪০০ বিলিয়ন ডলার সরবরাহ করা হবে, যা মহামারির কারণে ভেঙে পড়া কানাডার স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উত্তরণে সহায়তা করবে। এছাড়া করোনার টিকার জন্যও ১০০ কোটি ডলারের প্রস্তাব করা হয়েছে বিলে।
ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেন, অর্থনীতি পুরোপুরি পুনরুদ্ধারে কানাডিয়ানদের টিকার আওতায় আনতে হবে। টিকার কর্মসূচিতে গতি এসেছে। এটা একটা ভালো দিক। তারপরও আমাদের চেষ্টা করতে হবে অধিক সংখ্যক কানাডিয়ানকে দ্রুত টিকা দেওয়ার।
কানাডার প্রিমিয়াররা বাড়তি অর্থ সংস্থানের এ সম্ভাবনাকে স্বাগত জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে তারা স্বাস্থ্য খাতের ব্যয় ২২ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছেন। আগামীতে যাতে এটি অব্যাহত রাখতেও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লাখ ৪৫ হাজার ২ শত ৭৮ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ২৩ হাজার ২শ ৫১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৯ লাখ ৫৪ হাজার ১৭ জন।