খাশোগি হত্যা মামলায় ফাঁসছেন এমবিএস

অবশ্যই পরুন

নির্বাসিত সৌদি সাংবাদিক ও যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টের নিবন্ধক জামাল খাশোগির হত্যা মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এমবিএস নামে পরিচিত দেশটির ডি ফ্যাক্টো শাসক যুক্তরাষ্ট্রের এক আদালতে মামলায় অভিযুক্ত হতে চলছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের স্বচ্ছতার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড বিষয়ে এক গোয়েন্দা প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে। ওই প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে জামাল খাশোগিকে হত্যায় মোহাম্মদ বিন সালমান সরাসরি নির্দেশ দিয়েছেন বলে তথ্য প্রকাশ করা হয়।

তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শিগগিরই এই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় মার্কিন ডাইরেক্টর অব ন্যাশনাল ইনটেলিজেন্সের দফতর (ওডিএনআই) এই প্রতিবেদন তৈরি করে।

সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের পড়তির মধ্যেই প্রতিবেদনটি প্রকাশ হতে যাচ্ছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শাসনামলে মার্কিন প্রশাসনের সাথে সৌদি রাজপরিবার বিশেষ করে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের যে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল, এরই মধ্যে হোয়াইট হাউজ তা থেকে বেরিয়ে আসার ঘোষণা দিয়েছে।

তবে ট্রাম্পের শাসনামলের অস্ত্র বাণিজ্যের চুক্তি প্রত্যাহার, সৌদি আরবে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বিদেশে থাকা দেশটির নাগরিকদের হয়রানিতে নিন্দা জানালেও মার্কিন প্রশাসন বলছে, ইরান ও ইরান সমর্থিত সশস্ত্র যোদ্ধাসহ আঞ্চলিক বিরোধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষায় এবং সন্ত্রাসবিরোধী অবস্থানের অংশীদারিত্বকে বলিষ্ঠ করার লক্ষ্যে সৌদি আরবকে অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখা হবে।

মার্কিন থ্যিঙ্ক ট্যাঙ্ক উইলসন সেন্টারের সৌদি আরব বিশেষজ্ঞ ডেভিড ওটাওয়ে এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি মনে করি এটি বাইডেনকে সঠিক অবস্থানে এনেছে।’

তিনি বলেন, ‘তিনি নির্ধারণ করতে যাচ্ছেন (সৌদি) নেতৃত্বের সাথে তার সম্পর্ক কেমন হবে এবং প্রত্যুত্তরে তিনি কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন।’

ওটাওয়ে বলেন, ‘এই সম্পর্কের সাথে অনেক বিষয়ই সংশ্লিষ্ট এবং আমি অনুভব করছি তা আরো অবনতির দিকে যাবে।’

সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তাকে এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনো সাড়া দেননি।

ওডিএনআইয়ের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা প্রতিবেদনের সময় বা বিষয়বস্তু নিয়ে কোনো মন্তব্য করবেন না।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য নীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার ছিল সৌদি আরব। ২০১৭ সালে ক্ষমতায় আসার পর সৌদি আরবে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরে ট্রাম্প দেশটিকে মুসলিম বিশ্বের নেতা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা শিল্পের লভ্যাংশ তৈরিকারী অন্যতম প্রধান দেশ হিসেবে প্রশংসা করেন।

মোহাম্মদ বিন সালমানের নীতির সমালোচক সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি নিজ দেশ ছেড়ে নির্বাসনে ছিলেন। তুর্কি নাগরিক ও গবেষক খাদিজা জেঙ্গিসকে বিয়ের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করতে গেলে ওয়াশিংটন পোস্টের এই নিবন্ধকারকে ২০১৮ সালের ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে তাকে হত্যা ও লাশ টুকরা টুকরা করা হয়।

সৌদি কর্তৃপক্ষ প্রথমে হত্যাকাণ্ডের বিষয় অস্বীকার করলেও পরে তারা জানায়, কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুর্ঘটনাক্রমে এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়। ওই সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে বিচারের আওতায় আনা হয়।

হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বছরের অক্টোবরে সৌদি যুবরাজের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা দায়ের করেছেন খাদিজা জেঙ্গিস। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, সৌদি যুবরাজই খাশোগিকে নির্মমভাবে হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন।

অভিযোগের ভিত্তিতে এই তদন্ত চালায় যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

সূত্র : ওয়াশিংটন পোস্ট

সর্বশেষ সংবাদ

অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে চাই: সিইসি নাসির উদ্দীন

দেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এস এম মো. নাসির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ