উপসাগরীয় এলাকা থেকে রণতরী নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। সাম্প্রতিক ইরানের হুমকি মোকাবিলায় এটি আগের অবস্থানেই থাকবে। ২০২০ সালের নভেম্বর থেকে পারস্য উপসাগরে টহল দিয়ে আসছে মার্কিন রণতরী ইউএসএস নিমিটজ। তবে গত ৩১ ডিসেম্বর এক বিবৃতিতে এটিকে দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার সি মিলার।
রোববার (৩ জানুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, সিদ্ধান্ত বদল করা হয়েছে। এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোফার সি মিলারের দেয়া নতুন বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং মার্কিন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ইরানের সাম্প্রতিক হুমকির ফলে রণতরীটি আগের জায়গাতেই রাখার ব্যাপারে নতুন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংকল্পের ব্যাপারে কারও সন্দেহ থাকা উচিত নয়।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দিলে ওয়াশিংটনের আরব মিত্রদের ভুগতে হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে ইরান। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি)-এর সিনিয়র কমান্ডার আমির-আলী হাজিযাদে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আমির-আলী হাজিযাদে বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যে কোনও যুদ্ধ শুরু হলে মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্ররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল বিশ্বের কোথাও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। মধ্যপ্রাচ্যে যদি কোনও ঘটনা ঘটে এবং যুদ্ধ লেগে যায় তাহলে আমরা মার্কিন ঘাঁটি এবং এসব ঘাঁটির স্বাগতিক দেশগুলোর মধ্যে কোনও পার্থক্য করবো না। মার্কিন ড্রোন হামলায় জেনারেল কাসেম সোলায়মানি হত্যার প্রথম বার্ষিকীকে কেন্দ্র করে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে উত্তেজনার পারদ ক্রমেই বাড়ছে। এর মধ্যেই উভয় পক্ষের দিক থেকে এমন পাল্টাপাল্টি বক্তব্য এলো।
ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগে ইরানের বিরুদ্ধে বেপরোয়া হামলা চালাতে পারেন বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। তিন সপ্তাহের কম সময় দায়িত্বে থাকবেন ট্রাম্প। এই স্বল্প সময়ের মধ্যেই তার নির্দেশে ইরানে ভয়াবহ হামলা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইরান ও মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ এবং নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্যাডিজের সহকারী পরিচালক ড্যানি পোস্টেল।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, শেষ সময়ে ট্রাম্প আহত ও কোণঠাসা। ইরানের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান মিত্রদের বিশেষ করে ইসরায়েল ও সৌদি আরবের চাপের মুখে রয়েছেন ট্রাম্প। তার আর কিছু সপ্তাহ সময় আছে এবং আমরা জানি তিনি অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ নেওয়া পছন্দ করেন। ইরানে হামলা সম্ভবত তার সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত ঘটনা হতে পারে। সূত্র: আল জাজিরা।